প্রতি বছর হবে টেট, আশ্বাস দিয়েছেন প্রাথমিক পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল। —প্রতীকী ছবি
২০১৪ এবং ২০১৭ সালে টেট উত্তীর্ণদের জন্য ভাল খবর। এ বছরেই তাঁদের নিয়োগের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী বলে জানিয়ে দিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল। মঙ্গলবার তিনি আরও জানিয়েছেন, এ বার থেকে প্রতি বছর প্রাথমিকে শিক্ষক পদে যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষা (টেট) হবে। বছরে দু’বার করে হবে নিয়োগ। পাশাপাশি তিনি এ-ও জানিয়েছেন, টেট পাশ করলেই চাকরি নয়। ২০১৬ সালের নীতি মেনেই হবে নিয়োগ।
মাসের পর মাস টেট প্রার্থীরা চাকরির দাবিতে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন। সে বিষয়ে মঙ্গলবার মুখ খুলেছেন পর্ষদের নতুন সভাপতি গৌতম। জানিয়েছেন, নিয়োগ নীতি অনুযায়ী সকলকে চাকরি দেওয়া যাবে না। তাঁর কথায়, ‘‘২০১৪ সালে পাশ করা যে প্রার্থীরা আন্দোলন করছেন, তাঁদের মধ্যে ১৬ হাজার ১৮১ জনের নাম প্যানেলে নেই। এ নিয়ে বিভিন্ন ভাবে নানা সংবাদমাধ্যমে ভুল বার্তা যাচ্ছে। ২০১৬ সালের নিয়োগ নীতিতে বলা হয়েছে, যাঁরা টেট পাশ করবেন এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, এক মাত্র তাঁরাই আবেদন করতে পারবেন। তাই সকলকে চাকরি দেওয়া যাবে না। আইন মেনেই নিয়োগ হবে।’’ এর পরেই গৌতম প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘‘যাঁরা ২০১৪ এবং ২০১৭ সালে টেট পাশ করেছেন, তাঁরা আবেদন করুন। তাঁদের এই বছরের মধ্যে নিয়োগ করার ব্যবস্থা হবে। আগামী ২ বছরের মধ্যে কোনও টেট পাশ করা প্রার্থী বসে থাকবেন না।’’
গৌতমের আশ্বাস, এ বার থেকে প্রতি বছর হবে টেট। বছরে দু’বার করে হবে নিয়োগ। জানুয়ারি মাসে আরও পদ তৈরি করা হবে। যাঁরা টেট পাশ করেছেন, তাঁদের আবেদনের কথাও বলেছেন পর্ষদ সভাপতি। পাশাপাশি তিনি এ-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘টেট পাশ করা মানে চাকরি নয়। ২০১৪ এবং ২০১৭ সালে পাশ করেছি বলে চাকরি দিতে হবে, এটা নিয়ম নয়। টেট হল যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষা।’’
মঙ্গলবারের সাংবাদিক বৈঠকে টেট নিয়ে দুর্নীতির প্রসঙ্গও তুলেছেন গৌতম। তিনি বলেন, ‘‘এক বার দুর্নীতি হয়েছে বলে আর ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ করবেন না, এমনটা যেন না হয়।’’ এমনকি তিনি এ-ও বলেন যে, তাঁর আমলে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তিনি তদন্তে সব রকম সহায়তা করবেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার কাজ করার পরেও যদি কোনও অভিযোগ ওঠে, তদন্তের মুখোমুখি হতে রাজি।’’
২০১৪ সাল থেকে টেটের পরিসংখ্যানও তুলে ধরেছেন পর্ষদ সভাপতি গৌতম। ওই বছর টেট দিয়েছিলেন কুড়ি লক্ষ এক হাজার তিনশো এক জন। পাশ করেছিলেন এক লক্ষ চব্বিশ হাজার ন’শো বাহান্ন জন। নিয়োগের জন্য আবেদন করেছিলেন এক লক্ষ আঠারো হাজার আটশো একুশ জন। প্যানেলে নাম ওঠে বিয়াল্লিশ হাজার ছ’শো সাতাশ জনের।
২০১৭ সালে পরীক্ষা দিয়েছিলেন এক লক্ষ উননব্বই হাজার পাঁচশো চোদ্দ জন। পাশ করেছিলেন ন’হাজার আটশো ছিয়ানব্বই জন। ২০২০-২১ সালে শূন্যপদ ছিল ষোলো হাজার পাঁচশো। নিয়োগের আবেদন করেছিলেন উনত্রিশ হাজার ছ’শো পঁয়ষট্টি জন। প্যানেলে নাম ওঠে তেরো হাজার ছ’শো পঁচাশি জনের। চাকরি পেয়েছিলেন তেরো হাজার পাঁচশো চৌষট্টি জন।