Petrol Diesel Price Hike

fuel price hike: ‘পেট্রলের দাম এক টাকাও তখন বেশি মনে হত...’

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অবশেষে পেট্রলের সেঞ্চুরি পূর্ণ নানা দিক দিয়েই ঐতিহাসিক প্রবীণ গাড়ি সওয়ারিদের কাছে।

Advertisement

ঋজু বসু

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২১ ০৬:২৩
Share:

শতায়ু দিলীপকুমার রায় এবং ১৯৬৩-র রসিদ (প্রসূন হাজরার সংগ্রহ)।

১৯৭০এ প্রথমবার তেহরান টু ঢাকা র‌্যালি করতে যাওয়াটা স্পষ্ট মনে আছে ৭২ বছরের তরতাজা বৃদ্ধ রবি সিংহানিয়ার। তখন পেট্রলের দাম গ্যালনে ধরা হত, মানে পাঁচ লিটার। রবি বলছিলেন, ওই সময়ে এ দেশে গ্যালনপিছু ৪.৭৫ টাকা পেট্রলের দর। পাকিস্তানে ৩.৮০ টাকা, আফগানিস্তানে তিন টাকা আর ইরানে আড়াই টাকা গ্যালন।

Advertisement

রানি রাসমণির জামাই মথুরবাবুর পরের ষষ্ঠ প্রজন্ম আর এক গাড়িপাগল প্রসূন হাজরারও শৈশব স্মৃতিতেও পেট্রলের গ্যালন পাঁচ টাকার আশপাশেই। “যত দূর মনে পড়ে বাবা-কাকাদের সেই দামটাই বেশি মনে হত”, বলছিলেন প্রসূনবাবু। তেলের দাম বাড়ছে বলেই তখন পরিবারের ‘নৌবহরে’র সদস্য লা শাল, স্টুডিবেকার, বুইক, মরিস, জাগুয়ার কতগুলো বেচে দেওয়া হল। তবু ১৯৭২ নাগাদ একটা স্ট্যান্ডার্ড গাড়িতে পরিবারের ৭-৮ জনকে খাজুরাহো বেড়াতে নিয়ে যান প্রসূনের বাবা। তেলের খরচ? সব মিলিয়ে ৫০০ টাকাও হবে কি না, সন্দেহ!

৯৯ এর কোঠায় খানিক থমকে থাকার পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অবশেষে পেট্রলের সেঞ্চুরি পূর্ণ নানা দিক দিয়েই ঐতিহাসিক প্রবীণ গাড়ি সওয়ারিদের কাছে। সম্ভবত এ শহরের প্রবীণতম বাসিন্দা ডোভার লেনবাসী ১০৫ বছরের দিলীপকুমার রায় মশাইও টের পাচ্ছেন এই শৃঙ্গজয়ের তাৎপর্য। এত বয়সেও দিলীপবাবু রোজ সকালে গোটা তিনেক খবরের কাগজ খালি চোখে খুঁটিয়ে পড়েন। পেট্রলের লিটারের দাম তাঁর বয়সকে ছাপাতে পারেনি এখনও। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে তা-ও অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে না দিলীপবাবুর পরিজনের।

Advertisement

১৯৫৯এ অ্যাম্বাসাডর যুগের শুরু। তার আগে ছিল ল্যান্ডমাস্টার। প্রথম অ্যাম্বাসাডর আসার সময়টা দাম মেরেকেটে তিন টাকা বা তিন টাকা ২৫ ছিল প্রতি গ্যালন। অর্থাৎ, লিটারে ৬০-৭০ পয়সা। দিলীপবাবুর স্মৃতিতে এখন পেট্রল, গ্যালনের কচকচি ধূসর। তবে তাঁর মনে আছে নিজের গাড়িতেই এন্টালির বাড়ি থেকে দমদমে এইচএমভি-র স্টুডিয়োয যেতেন। রজনীকান্ত সেনের দৌহিত্র, বিশিষ্ট গীতিকার-সুরকার দিলীপবাবু বহু নামী শিল্পীকে গান তুলিয়েছেন। পাম্পে গাড়ি দাঁড় করিয়ে পাঁচ সিকে দিয়ে পেট্রল নেওয়ার স্মৃতিটুকু এই সন্ধ্যায় তাঁরও মনে পড়েছে।

তখন কিন্তু নতুন গাড়ি কিনলেই পুরো ট্যাঙ্ক ভর্তি করে মুফতে পেট্রল দেওয়া দস্তুর ছিল মনে আছে রবিবাবুর। “এখন বোধহয় আগে তেল না-ভরলে গাড়িতে উঠতে দেবে না", হেসে ওঠেন তিনি। ১৯৬৯এ একটা ফিয়েট কেনার সময়ে পাঁচ লিটার পেট্রল নিখরচায় দিয়েছিল। “৬০ বছরে তেলের দাম মোটামুটি ১০০ গুণ বাড়তে দেখলাম। কম কৃতিত্ব নয়”, তাজ্জব প্রবীণ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement