ফাইল ছবি
হাওড়ার পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট তলব করতে গিয়ে কলকাতা হাই কোর্ট দু’দিন আগেই জানিয়েছিল, রাজ্য সরকার প্রয়োজন মনে করলে আধাসেনা বা সেনা নামাতেই পারে। বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, অশান্তি এড়াতে রাজ্যে প্রতিরোধাত্মক ব্যবস্থা নিতে হবে। হাওড়ার অশান্তির পরে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলায় হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, আইনশৃঙ্খলার আসল পরিস্থিতি আঁচ করতে হবে এবং কোনও রকম গোলমালের আশঙ্কা থাকলেই পদক্ষেপ করতে হবে। প্রাণহানি বা সম্পত্তির কোনও রকম ক্ষতি হতে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে রাজ্য সরকারকে।
হাওড়ার সাম্প্রতিক অশান্তির ভিডিয়ো, ছবি দ্রুত সংগ্রহের জন্য রাজ্যকে নির্দেশ দিয়ে কোর্ট বলেছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ২৭ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। সে-দিন রাজ্যকে এ ব্যাপারে রিপোর্টও জমা দিতে বলেছে কোর্ট।
পয়গম্বর সম্পর্কে বিজেপির সাসপেন্ড হওয়া মুখপাত্র নূপুর শর্মার অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে গত সপ্তাহে হাওড়ার কিছু এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। জাতীয় সড়কে ১১ ঘণ্টা অবরোধ চলে, ব্যাপক অশান্তি ও ভাঙচুর হয়। নীলাদ্রি সাহা নামে এক আইনজীবী ১০ জুন রাতে এই নিয়ে মামলা করেন। পরে আরও কয়েকটি জনস্বার্থ মামলা হয়। মামলার শুনানিতে নীলাদ্রিবাবুর আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত ও পল্লবী চট্টোপাধ্যায় জানান, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শান্তিপূর্ণ অবস্থানের নামে জমায়েত থেকে প্ররোচনামূলক স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের আশঙ্কা, যে-কোনও দিন ফের গোলমাল বেধে যেতে পারে। সে-ক্ষেত্রে পরিস্থিতি সামলাতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন আছে বলে তাঁরা দাবি করেন। সুস্মিতাদেবী বলেন, ‘‘তাঁদের সওয়ালকে গুরুত্ব দিয়ে বিচার করেই হাই কোর্ট এই বিষয়ে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে।’’
হাওড়া-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের অশান্তি সম্পর্কে রাজ্য সরকার বুধবার কোর্টে রিপোর্ট জমা দেয়। তাতে ওই সব ঘটনায় ক’টি এফআইআর হয়েছে এবং ক’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার সবিস্তার তথ্য রয়েছে। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় আদালতকে জানান, রাজ্য প্রশাসন গোলমালের ভিডিয়ো ফুটেজ সংগ্রহ করছে। তার ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন বা নির্দেশিা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণও দেওয়া হচ্ছে বলে জানান এজি।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।