Krittika Pal

নানা ধরনের চাপই বাচ্চাদের মনে তৈরি করছে অবসাদ, সেখান থেকেই বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা

আমাদের অনেকেরই একটা ভুল ধারণা আছে, অবসাদ মূলত চাকরি না পাওয়া, ব্যর্থ প্রেম বা বাবা-মা মারা যাওয়ার মতো বিভিন্ন কারণে আসে।

Advertisement

কেদার বন্দ্যোপাধ্যায়

মনোরোগ চিকিৎসক শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৯ ২০:৪১
Share:

—প্রতীকী ছবি।

দশম শ্রেণির পড়ুয়া কৃত্তিকা পালের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর তদন্তকারীদের প্রাথমিক ধারণা, ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু তার কোনও কারণ এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। আত্মহত্যার কারণ কী ছিল, সেটা জানা তো জরুরি। কিন্তু তার আগে এটা জানা আরও জরুরি, এমন পরিস্থিতি কী ভাবে রোখা যায়!

Advertisement

আত্মহত্যা মূলত দু’ভাবে হয়। একটা তাৎক্ষণিক আবেগ থেকে। আর অন্যটা অনেক পরিকল্পনা করে। তাৎক্ষণিক আবেগ থেকে যাঁরা আত্মহত্যা করেন, সাধারণত তাঁদের ব্যক্তিত্বের ধরনে গন্ডগোল দেখা যায়। আর যাঁরা পরিকল্পনা করে আত্মহত্যা করেন তাঁদের অনেকের ক্ষেত্রেই অবসাদ নিজেকে শেষ করার একটা অন্যতম কারণ।

আমাদের অনেকেরই একটা ভুল ধারণা আছে, অবসাদ মূলত চাকরি না পাওয়া, ব্যর্থ প্রেম বা বাবা-মা মারা যাওয়ার মতো বিভিন্ন কারণে আসে। কিন্তু এটা জেনে রাখা ভাল, অবসাদের শুরুটা কিন্তু এই ১৩-১৪ বছর বয়স থেকেই হয়। অবসাদ থেকে যাঁরা আত্মহত্যা করেন, তাঁরা অনেক গুছিয়ে সুন্দর পরিকল্পনা করে কাজটা করেন। বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, যিনি আত্মহত্যা করছেন তিনি এর আগেও একাধিক বার চেষ্টা করছেন। কিন্তু বারে বারে ব্যর্থ হয়েছেন। কেউ হয়তো তৃতীয় বার বা চতুর্থ বারে গিয়ে আত্মহত্যায় ‘সাফল্য’ পান। যেমন এই কৃত্তিকা এর আগে এক বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল বলে শুনলাম। সে কথা যদিও তার স্কুল কর্তৃপক্ষ জানতেন না। সেটা জানানো যদিও জরুরি ছিল।

Advertisement

আরও পড়ুন: লভ ইউ কে, ডোন্ট ফরগেট মি... কৃত্তিকার ‘সুইসাইড নোটে’ কে এই ‘কে’? উত্তর খুঁজছে পুলিশ​

এই অবসাদেরও আবার দুটো ভাগ আছে। প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি। প্রথম ভাগে যাঁরা পড়েন, তাঁদের অবসাদের কোনও কারণ নেই। আর যাঁরা দ্বিতীয় ভাগে পড়েন, তাঁদের ক্ষেত্রে অবসাদের একটা নির্দিষ্ট কারণ আছে। আজকাল যে সমস্ত বাচ্চাদের মা-বাবারা মনোরোগ চিকিৎসকদের ক্লিনিকে নিয়ে আসেন দেখি, তাদের বেশির ভাগেরই কিন্তু এই ‘কারণ’টা রয়েছে। কারও ক্ষেত্রে সমাজের চাপ, কারও ক্ষেত্রে পারিবারিক চাপ, কারও আবার পড়াশোনার চাপ, স্কুলের চাপ— এ সব মিলিয়ে অবসাদ আসছে। আর সেই চাপ সামলাতে না পারলেই এরা আত্মহত্যার চেষ্টা করছে।

আরও পড়ুন: হাতের শিরা কাটা, রানিকুঠির নামী স্কুলের শৌচালয়ে উদ্ধার মেধাবী ছাত্রী, হাসপাতালে মৃত্যু​

বাবা-মায়েদের আরও সতর্ক হতে হবে। কোনও রকম অস্বাভাবিকতা দেখলেই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। তাঁদের পরামর্শ নিন। এই প্রবণতা কিন্তু ছোট থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে ঠেকানো সম্ভব। আর বাচ্চা সম্পর্কে সব তথ্যই স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে রাখা ভাল। কেন না, দিনের একটা বড় অংশ তো ওরা স্কুলেই থাকে।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement