নবান্ন। ফাইল চিত্র।
গরহাজিরায় বেতন কাটার হুঁশিয়ারি ছিল। নিষেধাজ্ঞা ছিল ছুটিতে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার বাম-কংগ্রেসের ২৪ ঘণ্টার ভারত বন্ধের বিশেষ কোনও প্রভাব দেখা গেল না রাজ্যের সরকারি কার্যালয়ে কর্মচারীদের হাজিরায়। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, এ দিন নবান্ন-সহ সব সরকারি কার্যালয়ে হাজিরার হার ছিল ৯৫ শতাংশের আশেপাশে, যা স্বাভাবিক। এরই মধ্যে কোন কোন কর্মী বন্ধকে মাঝখানে রেখে আগের ও পরের দিন ছুটি নিয়েছেন, সব দফতরকে তার তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছে অর্থ দফতর।
এ দিন সরকারি কর্মীদের হাজিরা নিশ্চিত করতে সোমবার নির্দেশিকা দিয়ে করে অর্থ দফতর জানিয়েছিল, ধর্মঘটের দিন কারও ছুটি গ্রাহ্য করা হবে না। নির্দেশিকা অমান্য করে যাঁরা বন্ধের দিন অফিস কামাই করবেন, তাঁদের কর্মজীবন থেকে এক দিন বাদ যাবে। কাটা যাবে ওই দিনের বেতনও। তবে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে অথবা আগে থেকে যাঁরা নির্দিষ্ট কারণে ছুটি নিয়ে রেখেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এই ধরনের কোনও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হবে না।
নবান্ন, নব মহাকরণ, খাদ্য ভবন-সহ প্রায় সব সরকারি কার্যালয়ে এ দিন হাজিরা ছিল স্বাভাবিকই। ট্রেনে যাঁরা আসেন, তাঁদের অনেকেরই কার্যালয়ে পৌঁছতে দেরি হয়েছে। তবে অনেকে ঝঞ্ঝাট এড়াতে ভোরের ট্রেনে অফিস পৌঁছে গিয়েছিলেন। এ দিনের ধর্মঘটে শাসক দলের নেতানেত্রীদের রাস্তায় নেমে সক্রিয় ভাবে বিরোধিতা করতে দেখা যায়নি। কর্মচারীদের একাংশ জানান, এ দিন অফিস আসতে গিয়ে তাঁদের বাড়তি ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। পরিবহণ দফতর পর্যাপ্ত বাস চালানোর দাবি করলেও অনেক কর্মী জানান, এ বারের বন্ধে বাসের সংখ্যা তুলনায় কম ছিল।
সরকারি বিদ্যুৎ ক্ষেত্রেও এ দিন কর্মীদের উপস্থিতির হার ছিল অন্যান্য দিনের মতো। কাজ হয়েছে স্বাভাবিক ভাবেই। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থায় প্রায় ৯৫ শতাংশ কর্মী উপস্থিত ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে যে-হেতু শিফটিং ডিউটি হয়, তাই সকালের দিকে কাজের সময় ৯৩ শতাংশ কর্মী উপস্থিত ছিলেন বলে বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর।
অতীতের কয়েকটি বন্ধের আগের রাতে কর্মীদের অফিসে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু এ বারের ধর্মঘট উপলক্ষে মঙ্গলবার রাতে তেমন কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। তবে খাদ্য ভবন এবং সল্টলেকের কয়েকটি সরকারি অফিসে অল্প সংখ্যক কর্মী মঙ্গলবার রাতে থেকে গিয়েছিলেন।
অর্থ দফতর এর মধ্যেই অন্য সব দফতরকে নির্দেশিকা দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, মঙ্গল, বুধ এবং আজ, বৃহস্পতিবার যে-সব কর্মী অনুপস্থিত থাকবেন, নাম ও পদ-সহ তাঁদের তালিকা জমা দিতে হবে। সেই প্রক্রিয়ার শেষে আগেকার নির্দেশিকা অনুযায়ী পদক্ষেপ করবে সরকার।