অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
দু’দিন বাদেই কাঁথিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা। তার আগে এক দিকে বারোজ, অর্জুননগরের মতো কয়েকটি এলাকা তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষে উত্তপ্ত। অন্য দিকে, যে নন্দীগ্রামে সম্প্রতি তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছিল, সেখান থেকে সভায় লোক আনা হবে কী ভাবে, তাই নিয়েও চলছে আলোচনা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য দুই এলাকা থেকেই সভায় ভাল পরিমাণে লোক নিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন জেলা নেতৃত্ব।
জেলার ভগবানপুর-২ ব্লকের বারোজ দু’দিন ধরে থমথমে। দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। মঙ্গলবার স্থানীয় স্কুলে পড়ুয়াদের পরীক্ষাও হয়নি। তবে এরই মধ্যে এলাকার সাংগঠনিক কাজকর্ম কী ভাবে পরিচালনা করা হবে, তা ঠিক করার জন্য এ দিন বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে বরোজ এবং অর্জুননগর অঞ্চলের জন্য একজনকে আহ্বায়ক হিসাবে নিযুক্ত করেন ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব। আগামী ৩ ডিসেম্বর কাঁথিতে অভিষেকের জনসভায় ওই এলাকা থেকে ২৫টি বাসে তৃণমূলের কর্মীরা যোগ দেবেন। শুধু বরোজ থেকেই তিনটি বাস, ২০টি অটো এবং ৫০০টি মোটরবাইক নিয়ে যাওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে। জেলা পরিষদ সদস্য তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা মানব পড়ুয়া বলেন, ‘‘অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি মিহির ভৌমিকের উপরে যে ভাবে আক্রমণ করেছে বিজেপি, তাতে এলাকাবাসী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাইছেন। তাই নতুন করে তাঁরা অভিষেকের জনসভায় যাওয়ার জন্য আমাদের গাড়ির বন্দোবস্ত করার কথা বলেছেন। আমরাও জেলা নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’
দু’দিন আগে মন্ত্রী অখিল গিরির সভার অদূরে বোমাবাজি এবং মঙ্গলবার তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির উপর হামলার অভিযোগের পরে সুনসান পাঁউশি বাজারও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মিষ্টির দোকানদার বলেন, ‘‘কয়েক দিন ধরে যা চলছে, তাতে দোকান খোলার মতন সাহসই দেখাতে পারছি না।’’ পাঁউশি হাইস্কুলে পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির বাৎসরিক পরীক্ষা ছিল। মঙ্গলবার সেই পরীক্ষা বন্ধ ছিল। প্রধান শিক্ষক শ্যামসুন্দর মান্না বলেন, ‘‘দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির পঠনপাঠন আপাতত বন্ধ। পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির বাৎসরিক পরীক্ষা মঙ্গলবার বন্ধ রাখা হয়েছিল। বুধবার পরীক্ষা হয়েছে।’’
তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মিহিরের উপরে হামলার অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে ভূপতিনগর থানার পুলিশ। এদের মধ্যে বিজেপির স্থানীয় বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতির গাড়ি চালকও রয়েছেন। যদিও রবীন্দ্রনাথ বলছেন, ‘‘পুলিশ নিরীহদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। আমার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআরপিএফ কর্মীরা যে বাড়িতে থাকতেন, সেখানে জানলার কাচ ভাঙচুর করেছে শাসকদলের দুষ্কৃতীরা।’’ তৃণমূলের তরফে এই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি নন্দীগ্রাম থেকেও ভাল সংখ্যক লোক সভায় নিয়ে যেতে চান জেলা নেতৃত্ব। ঠিক হয়েছে, নন্দীগ্রাম-১ ব্লক থেকে ৩৩টি বাস এবং নন্দীগ্রাম-২ ব্লক থেকে ১৭টি সভায় যাবে। তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান পীযূষ ভূঁইয়া বলছেন, ‘‘এই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।’’ নন্দীগ্রামের আর এক দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা পরিষদের সহ-সভাপতি শেখ সুফিয়ানের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে একাধিকবার ফোন করা হয়। তবে তিনি ফোন ধরেননি।