—ফাইল চিত্র।
হোমটাস্ক দিয়েছেন দলনেত্রী, পড়া ধরছেন প্রশান্ত কিশোর।
শুক্রবার বেলা এগারোটা নাগাদ ফোন আসে যেমন তৃণমূলের গোয়ালতোড় ব্লক সভাপতি ভাস্কর চক্রবর্তীর মোবাইলে। তাঁর দাবি, ‘‘ফোনটা ধরতেই ও প্রান্ত থেকে ভাঙা বাংলায় বলে ওঠেন, ‘আমি প্রশান্ত কিশোর বলছি।’ সত্যি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম।’’ ভাস্কর জানান, মিনিট দশেক কথা বলেছেন প্রশান্ত। সংগঠনের কী হাল, জনসংযোগ কেমন এগোচ্ছে, তা নিয়ে খোঁজখবর নেন। ভাস্করের কথায়, ‘‘প্রশান্ত বলেন, কালকের মধ্যেই ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি নিয়ে জনসংযোগে ঝাঁপিয়ে পড়তে।’’
ফোন পেয়েছেন গড়বেতা ব্লক সভাপতি সেবাব্রত ঘোষও। তবে প্রশান্তের সংস্থা থেকে। তিনি বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার সন্ধে সাড়ে ৭টা নাগাদ মোবাইলে ফোন করে এক জন বলেন, ‘প্রশান্ত কিশোরের টিম থেকে বলছি’। জানতে চান সাংবাদিক বৈঠক করে জনসংযোগ শুরু হয়েছে কিনা। শুরু করলে তার ছবি নির্দিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে পাঠাতেও বলা হয়।’’
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘অনেককেই প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা থেকে ফোন করছে। আমাকেও করেছিল। তবে ভাস্কর ছাড়া আর কাউকে প্রশান্ত নিজে ফোন করেছেন বলে শুনিনি।’’ পর্যবেক্ষকদের ধারণা, নীচুতলায় দলীয় সংগঠনে ঝাঁকুনি দিতেই সম্ভবত নিজে খোঁজ নিচ্ছেন ভোটকুশলী পিকে। যেখানে ভোটে বড় ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল, সম্ভবত সেখানেই বাড়তি নজর দিচ্ছেন তিনি। গোয়ালতোড়ে গত পঞ্চায়েত ভোটে ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৩টি ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। পঞ্চায়েত সমিতির ২৫টি আসনের মধ্যে ৭টিতেই জিতেছিল তারা। লোকসভায় তৃণমূলের হাল আরও খারাপ হয়েছে। ব্লকের ১৪৫টি বুথের মধ্যে মাত্র ৩০টিতে এগিয়ে ঘাসফুল। এলাকায় তৃণমূলের কিছু কার্যালয়ও বন্ধ পড়ে।
প্রশান্তের ফোন পেয়ে আর দেরি করেননি ভাস্কর। শনিবার সকালেই সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন তিনি। তার পর ব্লক নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির স্টিকার, কার্ড, গেঞ্জি, লিফলেট বিলি করেন। ভাস্কর বলছেন, ‘‘প্রশান্তের নম্বর সেভ করে রেখেছি। দরকারে পরামর্শ নেব।’’