ঠিক এক সপ্তাহ আগে রাসায়নিক দিয়ে রঙিন করা বিষবৎ আনাজ আটক করেছিল পুলিশ। এ বার বাজেয়াপ্ত রাসায়নিক গুঁড়ো মেশানো এবং রং দিয়ে চকচকে করা আলু। একসঙ্গে তিনশো কিলোগ্রাম!
রবিবার সকালে দমদমের গোরাবাজারে রাজ্য পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখা (ইবি) ও দমদম থানা যৌথ ভাবে হানা দিয়ে এক পাইকারের আড়ত থেকে ওই আলু আটক করেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ওই আড়তের এক ম্যানেজারকে। ইবি-র ডিজি বিজয় কুমার জানান, ধৃতের নাম বিমান ভৌমিক। আড়তদার রামজি প্রসাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানান ডিজি। ধৃত ম্যানেজারের সঙ্গে সঙ্গে আড়তদারের বিরুদ্ধেও মামলা রুজু হয়েছে।
ইবি ও ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রের খবর, চন্দ্রমুখী আলুতে লাল রং এবং জ্যোতি আলুতে হলুদ রং ও রাসায়নিক ব্যবহার করা হচ্ছিল। সেই রাসায়নিক রং মেশানো আলুই এ দিন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ইবি জেনেছে, ওই সব রং, রাসায়নিক মানবদেহের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর।
প্রশ্ন উঠছে, আনাজে রাসায়নিক ও রং স্প্রে করার হয়, যাতে সেগুলো দেখতে তাজা ও রঙিন লাগে। আলু রঙিন আনাজ নয়। তা হলে রং ও রাসায়নিক মেশানোর কারণ কী?
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, আলুতে রাসায়নিক গুঁড়ো ব্যবহার করা হচ্ছে মূলত তার ওজন বাড়াতে। ঠিক যে-ভাবে গোটা ধনেতে গন্ধক ও কালো জিরেতে এঁটেল মাটি কালো রং করে তার গুঁড়ো এবং পিচ শুকিয়ে গুঁড়ো করে মেশানো হয়। এর সঙ্গে রং মেশালে আলুর গায়ের কালো দাগ ঢাকা পড়ে যায় এবং আলু দেখতে চকচকে আর আকর্ষক হয়ে ওঠা। তা ছাড়া রাসায়নিক গুঁড়ো মাখানো আলু বেশ কিছু দিন তাজাও থাকে।
ইবি সূত্রের খবর, রং ও রাসায়নিক গুঁড়ো মেশানো আলু কিড স্ট্রিটের কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগার ও এন্টালির কাছে গোবরায় রাজ্য সরকারি পরীক্ষাগারে পাঠিয়ে দেখা হবে, ওতে কী আছে এবং ওই আলু খেলে মানবশরীরে তার কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে।
২৭ অগস্ট পুলিশি অভিযানে ব্যারাকপুর তালপুকুর বাজারের কয়েক জন বিক্রেতার ঝাঁকা বোঝাই আনাজের ভিতরে লুকোনো স্প্রে মেশিন আর সবুজ, বেগুনি এবং মেটে রঙের রাসায়নিক ডিব্বার হদিস পাওয়া গিয়েছিল। ইবি ও টিটাগড় থানার যৌথ অভিযানে গ্রেফতার করা হয় চার আনাজ বিক্রেতাকে। তাদের রঙিন আনাজও বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। তখনই খবর মেলে আলুতেও এই ধরনের কারসাজি চলছে।