এখনও পাইকারি বাজারে গড়ে ২৬ থেকে ২৯ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে।
রাজ্য সরকার আলুর দর বেঁধে দেওয়ার পরে ১৭ দিন কেটে গেলেও খুচরো বাজারে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে আসেনি। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, সরকার, ব্যবসায়ী সমিতি এবং সরকারি টাস্ক ফোর্সের সদস্যদের মধ্যে বোঝাপড়ায় ঘাটতির কারণেই এই পরিস্থিতি। আলুর দাম না-কমার কারণ সম্পর্কে রাজ্য টাস্ক ফোর্সের সদস্যরাও কার্যত অন্ধকারে।
আলু ব্যবসায়ী সমিতি বলছে, দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে কৃষক এবং হিমঘর-মালিকদের বোঝাতে হবে সরকারকেই। অথচ সোমবার সরকারি ভাবে এ ব্যাপারে নবান্নের বক্তব্য পাওয়াই যায়নি। ফলে ঘোরালো পরিস্থিতিতে আলু কিনতে নাজেহাল হচ্ছেন বঙ্গবাসী।
গত ২৪ জুলাই পাইকারি বাজারে আলুর দাম কিলোগ্রাম প্রতি ২২ টাকায় বেঁধে দিয়েছিল সরকার। তাদের যুক্তি ছিল, পাইকারিতে ২২ টাকায় আলু বিক্রি হলে তবেই খুচরো বাজারে তা ২৫ টাকায় মিলবে। কিন্তু এখনও পাইকারি বাজারে গড়ে ২৬ থেকে ২৯ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, তার জেরেই খুচরো বাজারে আলুর দাম কেজি প্রতি ২৮ থেকে ৩২ টাকা দরে বিকোচ্ছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত শুক্রবারও আলু ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করে চলতি সপ্তাহে আলুর দাম কেজি প্রতি ২৫ টাকায় নামাতে বলা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, সরকারের নির্দেশের ১৭ দিন পরেও দাম কমল না কেন?
সরকারি সূত্রের দাবি, সুফল বাংলার স্টল থেকে ২৪ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। বাজারে-বাজারে ঘুরে দাম কমানোর চেষ্টা করছেন টাস্ক ফোর্স এবং এনফোর্সমেন্ট বিভাগ। তবে টাস্ক ফোর্সের এক সদস্যের কথায়, “সরকারি বৈঠকে আমাদের ডাকা হয়নি। ফলে কী হচ্ছে, তা বলা সম্ভব নয়।”
রাজ্যের আলু ব্যবসায়ী সমিতির শীর্ষ নেতা বরেন মণ্ডলের দাবি, “কলকাতা ছাড়া সর্বত্র আলুর পাইকারি দাম কমেছে। আরও দাম কমাতে বৈঠক ডাকা হয়েছে। তবে কৃষক এবং হিমঘর-মালিকদের উপরেই আলুর দাম নির্ভর করে। তাই তাঁদের বোঝানো উচিত সরকারের।” বরেনবাবু দাবি করলেও সোমবার হুগলিতে খুচরো বাজারে জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ২৮ টাকায়, চন্দ্রমুখী ৩২ টাকায়। বর্ধমান ও বীরভূমেও একই ছবি। পূর্ব মেদিনীপুরেও দর ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজির মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়াতেও একই অবস্থা। উত্তরবঙ্গের মালদহ থেকে কোচবিহার, কিলোপ্রতি ২৬ থেকে ৩৫ টাকা, এই দরেই আলু কিনতে হচ্ছে মানুষকে।