মতুয়াদের ঠাকুরবাড়ি চত্বরে ফ্লেক্স। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোড-শো চলাকালীন কয়েক কিলোমিটার দূরে পোস্টার, ফ্লেক্স পড়ল দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে।
শনিবার এই ‘নব জোয়ার’ কর্মসূচিতে নদিয়া থেকে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় পৌঁছন অভিষেক। আজ, রবিবার অভিষেকের যাওয়ার কথা গাইঘাটার ঠাকুরনগরে মতুয়াদের পীঠস্থান ঠাকুরবাড়িতে। শনিবার বিকেলে অভিষেক যখন গাইঘাটায় পায়ে হেঁটে জনসংযোগ করছেন, তখনই খবর আসে, ঠাকুরবাড়ির আশপাশে মমতার বিরুদ্ধে লেখা প্রচুর ফ্লেক্স, পোস্টার পড়েছে। তাতে লেখা হয়েছে, ‘শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরকে কুরুচিকর ভাবে অপমান করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে জানাই ধিক্কার।’ নীচে লেখা, ‘অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ।’
সম্প্রতি মালদহে এক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মতুয়াদের আরাধ্য হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের নাম ভুল উচ্চারণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে মতুয়াদের একাংশ ক্ষুব্ধ হন। পথ অবরোধ, বিক্ষোভ চলে পরবর্তী বেশ কিছু দিন ধরে।
ফ্লেক্স-প্রসঙ্গে এ দিন বিজেপির বনগাঁর সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যে ব্যঙ্গাত্মক ভাবে মতুয়াদের আরাধ্য দেবতা হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের নাম বলেছিলেন, কুরুচিকর মন্তব্য করেছিলেন— তাতে মতুয়ারা তো প্রশ্ন তুলবেনই। অভিষেক রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে ঠাকুরবাড়িতে আসছেন। মতুয়ারা তা মেনে নেবেন কেন!’’
এ বিষয়ে বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুর বলেন, ‘‘শান্তনু নিজে লোকজন লাগিয়ে ফ্লেক্সগুলি লাগিয়েছেন। আমি তা দেখেছি। কোনও মতুয়া ভক্ত এ কাজ করেননি।’’ মমতার কথায়, ‘‘ঠাকুরবাড়িতে যে কেউ আসতে পারেন। যখন প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসেছিলেন, আমরা তো এমন কাজ করিনি।’’ তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘এটা বিজেপির অপসংস্কৃতি।’’
এ দিন বিকেল পৌনে ৫টা নাগাদ অভিষেক হরিণঘাটা হয়ে গাইঘাটার হাঁসপুরে ঢোকেন। প্রচুর মানুষ পথের ধারে ছিলেন। অভিষেক হাঁসপুর থেকে হেঁটে জলেশ্বর শিবমন্দির পর্যন্ত এসে সেখান থেকে গাড়িতে ওঠেন। এর পরে যশোর রোড ধরে রোড-শো এগোয় গাইঘাটা বাজার, চাঁদপাড়া বাজারের দিকে। রামচন্দ্রপুরে তাঁর রাত্রিবাসের কথা। সেখানে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
এ দিন পদযাত্রা এবং রোড শো শেষ হওয়ার পরে যশোর রোডে যানজট হয়। শ’য়ে শ’য়ে গাড়ি আটকে পড়ে। চাঁদপাড়া থেকে বনগাঁ পর্যন্ত যশোর রোড কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। যানজট কাটতে কয়েক ঘণ্টা লেগে যায়।