(বাঁ দিকে) সোমনাথ শ্যাম এবং অর্জুন সিংহ। —ফাইল ছবি।
উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দলে গুলি-বোমাবাজির ঘটনায় তাঁকে তলব করেছিল পুলিশ। কিন্তু সেই তলবে তিনি সাড়া দেননি। এ বার পুলিশই ছুটল বিজেপি নেতা অর্জুন সিংহের বাড়িতে! পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবারের ঘটনা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তাঁর বাড়িতে গিয়েছেন তদন্তকারীরা।
ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুনকে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যামও। আনন্দবাজার ডট কম-কে তিনি বলেন, ‘‘উনি অনেক কিছুই হারিয়েছেন। আর যা আছে, তা-ও হারাবেন। উনিই যে গুলি ছুড়েছেন, সেটা প্রমাণ করে দেব।’’
বুধবার রাতে অর্জুনের বাড়ির সামনে গুলি-বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। জগদ্দলে মেঘনা মোড়ে মজদুর ভবনের সামনে ওই ঘটনায় এক জন জখমও হয়েছেন। তৃণমূলের দাবি, জখম হওয়া যুবক তাদের দলের কর্মী। অর্জুনই তৃণমূল কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছেন। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ অর্জুনকে তলব করে জগদ্দল থানার পুলিশ। কিন্তু থানায় হাজিরা দেননি বিজেপি নেতা। এর পরেই বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁর বাড়িতে যান জগদ্দল থানার ওসি মধুসূদন মণ্ডল।
অর্জুন অবশ্য তৃণমূলের তোলা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আগেই। আনন্দবাজার ডট কমের কাছে অর্জুন দাবি করেন, রাত ১০টা নাগাদ নিজের বাড়ির অফিসে ছিলেন তিনি। সেই সময় আচমকা দু’রাউন্ড গুলি চলে বাইরে। শুনেই তিনি বাইরে বেরিয়ে আসেন। দেখেন, কয়েক জন দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। আর এক জনের পায়ে গুলি লেগেছিল। কিছু ক্ষণ পর স্থানীয়েরাই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। গুলি চলার কিছু ক্ষণ পর ওই এলাকায় আবার বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। অর্জুন বলেন, ‘‘গুলি-বোমাবাজির ঘটনার পর রাতেই মেল করে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করি। পরে জানতে পারি, রাতে আমার বিরুদ্ধেও একটা এফআইআর হয়েছে। পুলিশ আমার অভিযোগ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তার ভিত্তিতেই আমায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু আমি যাইনি।’’
পাল্টা তৃণমূলের বক্তব্য, মেঘনা জুটমিলে দুই শ্রমিকের মধ্যে মারামারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় গন্ডগোল শুরু হয়েছিল। সেখানে নমিত সিংহ নামে এক তৃণমূল নেতা ছিলেন। সেই নমিতের ঘনিষ্ঠ সাদ্দাম হোসেন নামে এক যুবকের গুলি লেগেছিল। গুলি চালিয়েছেন খোদ অর্জুন। জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ বলেছিলেন, ‘‘অর্জুন সিংহের লোকজন মেঘনা মিলের ভিতর এক শ্রমিককে মারধর করে। এর পরেই উত্তেজনা বাড়ে। উনি নিজেই গুলি চালিয়েছেন।’’
অর্জুনের অবশ্য বক্তব্য, “এলাকায় সিসি ক্যামেরা আছে। সে সব খতিয়ে দেখুক পুলিশ। তা হলেই বোঝা যাবে কে গুলি চালিয়েছে।”