—প্রতীকী ছবি।
সেই ছাত্রী কি ‘প্রেমিক’কে ফোনে যোগাযোগ করতে না পেরে শেষে নিজেই সঙ্গে কেরোসিন নিয়ে গিয়েছিলেন? কৃষ্ণনগরে পুড়ে মৃত ছাত্রীর ফোনের ‘কল রেকর্ড’ পরীক্ষা করার পরে পুলিশ সূত্রের দাবি, তাঁর প্রেমিককে না পেয়ে তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে ঘটনার দিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ১১টার মধ্যে ২১ বার কল করেন ওই ছাত্রী। দু’জনের কথোপকথনে এমন বিষয় উঠে এসেছে বলে তদন্তকারীদের একাংশের দাবি। তাঁরা জেনেছেন, ‘প্রেমিক’ কোথায়, কেন তিনি ফোন ধরছেন না, তা-ও জানতে চান ওই ছাত্রী। এক বারের জন্য তাঁর ফোন ধরতে বলার জন্য ওই বন্ধুটিকে তিনি বার বার অনুরোধও করেন।
পুলিশ সূত্রের দাবি, ওই ছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ার আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের এক তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল যুবকটির। তাকে এক বার সিঁদুরও পরিয়েছিল সে। বছরখানেক আগে সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। তার পর সমাজমাধ্যমে এই ছাত্রীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। কয়েক মাস আগে যুবকটি হোটেলে কাজ নিয়ে বেঙ্গালুরু চলে গেলে ছাত্রীটিও তার কাছে গিয়ে থাকতে শুরু করেন। সূত্রের দাবি, ফোনে যুবকটির নম্বর ‘হাজ়ব্যান্ড’ বলে ‘সেভ’ করেছিলেন তিনি, ফেসবুকে ওই যুবকের সঙ্গে বিয়ের কথাও জানান। এক মাস পরে অবশ্য বাড়ির লোকের চাপাচাপিতে তাঁকে ফিরে আসতে হয়।
এর পরেই সোনারপুরের তরুণীর সঙ্গে ফের যোগাযোগ তৈরি হয় যুবকটির। অন্য এক ‘বান্ধবী’র সঙ্গেও সে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে থাকে। গত ১৫ অক্টোবর ছাত্রীটি যখন বার বার তাকে ফোন করছিলেন, সে তখন সেই বান্ধবীকে নিয়ে রানাঘাটে ঘুরতে গিয়েছিল বলেই তদন্তকারীদের দাবি। তদন্তকারীদের অনুমান, তা বুঝতে পেরেই ছেলেটির বন্ধুকে ফোন করে ছাত্রীটি আত্মহত্যা করবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।
ছাত্রীর ওই কথা শুনেই যুবকটিকে ফোন করে জানান তাঁর বন্ধু। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ছাত্রীর কেরোসিন আনার কথা শুনেও যুবকটি পাত্তা দেয়নি। তদন্তে জানা গিয়েছে, বিকেল ৪টে নাগাদ সোনারপুরের তরুণীকে ফোনে বিষয়টি জানান যুবকের বন্ধু।
জানা গিয়েছে, রাত ১০টার কিছু আগে প্রেমিক যুবক কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠে ওই বন্ধুর সঙ্গে আড্ডা দিতে বেরোয়। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, রাত ১০টা ১২ মিনিটে ওই বন্ধুর ফোনেই ছাত্রীটির সঙ্গে তাঁর কথা হয়। যুবকটি জানায়, সে এই সম্পর্ক শেষ করতে চায়। তা শুনে ছাত্রীটি কান্নাকাটি করেন। আত্মহত্যার কথা বলেন বলেও দাবি। তদন্তকারীদের এই তত্ত্বে এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে কেরোসিনের সন্ধান।