বিজেপি সাংসদদের পথেই রুখল পুলিশ

এ দিকে এই ঘটনার জেরে রাস্তা আটকে থাকায় জাতীয় সড়কের দু’পাশে দাঁড়িয়ে পড়ে অনেক যানবাহন। যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়তে থাকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

মালদহ শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫:২৮
Share:

আটক: স্টেশন পরিদর্শনে যাওয়ার পথে ইংরেজবাজারে আটকে দেওয়া হয় বিজেপির দুই সাংসদ খগেন মুর্মু ও নিশীথ প্রামাণিককে। চিত্র

ক্ষতিগ্রস্ত হরিশ্চন্দ্রপুর ও ভালুকা রোড স্টেশন পরিদর্শনে যাওয়ার আগে ইংরেজবাজার শহরেই বিজেপির দুই সাংসদ এবং রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বকে আটকে দিল পুলিশ। বুধবার দুপুর দেড়টা নাগাদ শহরের ৩২০ মোড়ে বিজেপির সাংসদ খগেন মুর্মু ও নিশীথ প্রামাণিক ও তাঁদের সঙ্গীদের গাড়ি আটকে দেয় বিশাল পুলিশবাহিনী। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কেও পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে দেয়। বিজেপির সাংসদ ও নেতৃত্বরা গাড়ি থেকে নেমে কেন তাঁদের আটকানো হল, তা পুলিশের কাছে জানতে চান। তখন পুলিশের সঙ্গে তাঁদের রীতিমতো বাদানুবাদ হয়। সাংসদ ও নেতৃত্বরা জাতীয় সড়কের উপরেই বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সঙ্গে দলীয় কর্মী-সমর্থকরাও বিক্ষোভ দেখান।

Advertisement

এ দিকে এই ঘটনার জেরে রাস্তা আটকে থাকায় জাতীয় সড়কের দু’পাশে দাঁড়িয়ে পড়ে অনেক যানবাহন। যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত দুপুর দু’টো নাগাদ পুলিশ দুই সাংসদ সহ চার জনকে গ্রেফতার করে ইংরেজবাজার থানায় নিয়ে যায়। পরে তাঁদের ব্যক্তিগত জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, তৃণমূলের অঙ্গুলিহেলনেই পুলিশ তাঁদের আটকেছে। পুলিশ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, জেলায় যখন পরিবেশ শান্ত হচ্ছে তখন বিজেপি নেতারা জেলার পরিবেশকে আরও অশান্ত করে তুলতে চাইছে।

Advertisement

নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভের জেরে গত শনিবার মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর রেলস্টেশনে ভাঙচুর চলে। পরের দিন ভালুকা রোড স্টেশনে একই ভাবে ভাঙচুর হয়। রেলের দাবি, ওই হামলার জেরে দু’টি স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজারের ঘরের যন্ত্রাংশ, টিকিট কাউন্টারের কম্পিউটার, সিগন্যালিং ব্যবস্থা সহ সব কিছু অকেজো হয়ে পড়ে। ফলে গত তিন দিন ধরে ট্রেন চলাচল বন্ধ। বিজেপি সূত্রে খবর, এ দিন ওই দুই স্টেশনের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যেতে চেয়েছিলেন মালদহ উত্তর কেন্দ্রের সাংসদ খগেন ও কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন দলের রাজ্য নেতা রথীন্দ্রনাথ বসু ও মালদহ জেলা সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডল। তাঁদের রাস্তায় আটকে দিতে ইংরেজবাজার থানার পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশের একটি বিশাল দলও উপস্থিত হয়। ঘটনাস্থলে র‍্যাফ নামানো হলেও তাঁদের কাজে লাগানো হয়নি।

খগেনের অভিযোগ, হরিশ্চন্দ্রপুর ও ভালুকা রোড স্টেশনে প্রচুর সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে। শাসক দলের মদদপুষ্ট লোকজন সেই হামলাতে জড়িত। কিন্তু হামলাকারীদের ধরপাকড়ে পুলিশের ভূমিকা নিষ্ক্রিয়। তিনি বলেন, ‘‘ওই দুই স্টেশনে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা দেখতে এবং এলাকার আতঙ্কিত মানুষদের আশ্বস্ত করতে আমরা সেখানে যাচ্ছিলাম। কিন্তু পুলিশ শাসকদলের অঙ্গুলিহেলনে আমাদের আটকে দেয়। গ্রেফতার করে। তবে এ সব করে আমাদের রোখা যাবে না।’’ নিশীথ বলেন, ‘‘হরিশ্চন্দ্রপুর ও ভালুকা রেল স্টেশন দু’টিতে এতোটাই ক্ষতি হয়েছে যে, এখনও রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। সে কারণেই আমরা সেখানে যাচ্ছিলাম। কিন্তু পুলিশ শাসকদলের অঙ্গুলিহেলনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আমাদের মাঝ পথে আটকে দিল।’’ পুলিশ সুপার অলক রাজোরিয়া বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বিজেপির ওই প্রতিনিধি দল স্টেশনে গেলে আইন-শৃঙ্খলা জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারত। সে কথা মাথায় রেখেই তাদের আগেই আটকে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৌসম নুর বলেন, ‘‘বিজেপি নেতারা শান্ত জেলাকে অশান্ত করে তুলতে চায়। পুলিশ পুলিশের কাজ করেছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement