বলরামপুর মৃত্যু-রহস্য

আত্মঘাতীই হয়েছেন দুলাল, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট নিয়ে জানালেন নতুন পুলিশ সুপার

এ বার নতুন পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে নিয়ে জানিয়ে দিলেন, আত্মঘাতীই হয়েছেন দুলাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বলরামপুর শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৮ ০৪:২০
Share:

দুলাল কুমার।

বলরামপুরের বিজেপি কর্মী দুলাল কুমার আত্মহত্যা করেছেন বলে শনিবার দাবি করেছিলেন পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস। ময়না-তদন্তের আগেই তিনি এমন কথা কী করে বলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ঘটনাচক্রে, তাঁকে বদলিও হতে হয়েছে। এ বার নতুন পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে নিয়ে জানিয়ে দিলেন, আত্মঘাতীই হয়েছেন দুলাল।

Advertisement

শনিবার ডাভা গ্রামে হাইটেনশন তারের টাওয়ার থেকে গলায় ফাঁস দেওয়া বিজেপির গেঁড়ুয়া মণ্ডল-প্রমুখ দুলালের দেহ উদ্ধার হয়। পঞ্চায়েত ভোটে বলরামপুরে পর্যুদস্ত হওয়ায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই দিন কয়েক আগে ত্রিলোচন মাহাতো এবং পরে দুলালকে খুন করে টাঙিয়ে দেয় বলে অভিযোগে সরব বিজেপি নেতৃত্ব। জবাবে এ দিন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খুন বলে হইচই করে বিজেপি মিথ্যাচার করছে।’’

নতুন এসপি রবিবার দাবি করেন, ‘‘দুলালের মৃত্যু নিয়ে যাতে বিভ্রান্তি না থাকে, তার জন্য পাঁচ চিকিৎসকের দল ময়না-তদন্ত রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তাঁদের মতে, এটা আত্মহত্যা।’’ পুলিশেরই একাংশে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে জয়ের বদলির পিছনে কি আদৌ ‘আত্মহত্যা’-মন্তব্য দায়ী? নাকি অন্য কারণও রয়েছে? বিরোধীরা বলছেন, কিছু জেলায় পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীদের ময়দান থেকে সরাতে পুলিশের যেমন ‘সক্রিয়’ ভূমিকা ছিল, পুরুলিয়ায় তা ছিল না। তাই এখন পরপর দুই বিজেপি কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যুজনিত বিতর্কের সময়ে পুলিশের উপরে ‘কোপ’ নামছে। শাসক দল অবশ্য এমন তত্ত্ব মানতে নারাজ।

Advertisement

আরও পড়ুন: দুই মৃত্যুরই রিপোর্ট চায় দিল্লি, চুপ রাজ্য কমিশন

ময়না-তদন্ত রিপোর্ট। —নিজস্ব চিত্র।

আবার ‘আত্মহত্যা-তত্ত্ব’ মানতে নারাজ দুলালের পরিবার ও বিজেপি নেতৃত্ব। এ দিন দুলালের মা শুকুরমণি বলেন, ‘‘ঘরে এসে খাবে বলেছিল। কোন যুক্তিতে মানব, ছেলে আত্মহত্যা করেছে?’’ স্ত্রী মনিকা বলেন, ‘‘ওঁর মনে কোনও টানাপড়েন চললে আমি অন্তত জানতাম।’’ কলকাতায় বিজেপির রাজ্য পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় দাবি করেন, ‘‘ওঁকে খুন করাই হয়েছে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘যেমন নির্দেশ আসছে, তেমন রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে। আত্মহত্যা করতে কেউ অত উঁচুতে ওঠে? মোটরবাইক দূরে ফেলে আসে?’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো পাল্টা বলেছেন, ‘‘নিরপেক্ষ তদন্তই হচ্ছে। দল কেন প্রভাব খাটাতে যাবে?’’

সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে যাচ্ছেন বলে এ দিন জানান বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। পার্থর কটাক্ষ, ‘‘কেউ দুর্ঘটনায় মারা গেলেও ওরা সিবিআই চাইবে!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement