—ফাইল চিত্র।
বিয়ের পর থেকেই বাড়িতে অশান্তি। স্বামীর মাথায় টাক পড়ে যাওয়ায় কোনও কালেই তাঁকে পছন্দ হয়নি স্ত্রীর। মনের মিল তো ছিলই না, উল্টে সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতার অভাব। মূলত এই দুইয়ের কারণেই কলকাতার খিদিরপুরের বাসিন্দা ইফ্ফাত পরভিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছিল সন্তান খুনে ধৃত শান্তা শর্মার। কোন্নগরে বছর দশেকের বালক শ্রেয়াংশু শর্মা হত্যাকাণ্ডে মা শান্তা ও তাঁর বান্ধবী পরভিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই তথ্যই উঠে এসেছে বলে খবর পুলিশ সূত্রে।
শান্তা ও পরভিনকে ন’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় শান্তা জানিয়েছেন, পঙ্কজ শর্মার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয় ২০১২ সালে। বিয়ের পর থেকে তাঁদের মধ্যে অশান্তি লেগেই ছিল। পঙ্কজের মাথায় টাক একেবারেই পছন্দ করতেন না। তাই স্বামীর সঙ্গে কখনওই ভালবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়নি। তিনি যে মানসিক শান্তি চাইছিলেন, তা পরভিনের সঙ্গে থেকে পেয়েছিলেন। পরভিনের বিয়ে হয়েছিল ২০১৮ সালে। মাসখানেকের মধ্যে সেই বিয়ে ভাঙে। এর পরের বছর কলকাতার একটি মন্দিরে দু’জনে মালাবদল করেছিলেন।
তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, দু’জনের মোবাইল ঘেঁটে কিছু ছবি মিলেছে। যেখানে একটি ছবিতে দু’জনকে হাতে চুড়ি প়রে থাকতে দেখা গিয়েছে। যদিও শান্তার স্বামী পঙ্কজ জানিয়েছেন, শান্তা কোনও দিনই চুড়ি পরতেন না। বছর দুয়েক আগে স্ত্রী ও পরভিন দিল্লি গিয়েছিলেন। তখন ছেলেকে সঙ্গে নেননি শান্তা। গত বছর বিহারে ছেলেকে গিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ছেলেকে আলাদা রেখে শান্তা ও পরভিন একসঙ্গে রাত কাটিয়েছিলেন। এ কথা বাড়ি ফিরে ছেলেই জানিয়েছিলেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন পঙ্কজ।
শুক্রবার সন্ধ্যায় কোন্নগরের কানাইপুরের বাড়িতে সেই শ্রেয়াংশুকেই মাথা থেঁতলে খুন করা হয়। বাড়িতে একাই ছিল সে। অভিযোগ, গণেশ মূর্তি এবং ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে দেওয়া হয় ছোট ছেলেটির। রান্নাঘর থেকে আনাজ কাটা ছুরি এনেও আঘাত করা হয়। মঙ্গলবার মা শান্তাকে বাড়ি থেকেই ধরে পুলিশ। আর পরভিনকে কলকাতা পুলিশের ওয়াটারগঞ্জ থানার সাহায্য নিয়ে কবিতীর্থ সরণিতে ভাইয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (শ্রীরামপুর) অর্ণব বিশ্বাস জানান, স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে, মোবাইল ফোনের কললিস্ট, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ঘেঁটে দু’জনকে ধরা হয়েছে। তবে এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।