—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কাজের ধরাবাঁধা সময় নেই। টানা কাজের চাপে নিয়মিত শারীরচর্চাও করা হয়ে ওঠে না। এর সঙ্গে বিভিন্ন কারণে মানসিক অবসাদের জেরে মনঃসংযোগ হারিয়ে ফেলেন অনেকে। যা থেকে শরীরে বাসা বাঁধে নানা রোগ। সেই কারণে বাহিনীর সব পুলিশকর্মী যাতে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান, তার জন্য তাঁদের পরামর্শ দিলেন কলকাতার নগরপাল বিনীত গোয়েল। সম্প্রতি আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সে বাহিনীর আধিকারিকদের সঙ্গে একটি বৈঠকে ওই পরামর্শ দেন তিনি। পাশাপাশি, বাহিনীর প্রত্যেক কর্মী যাতে সরকারি চিকিৎসা বিমার সুবিধা নেন, সে দিকেও নজর দিতে কলকাতা পুলিশের ইউনিট প্রধানদের বলেছেন নগরপাল।
সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন প্রগতি ময়দান থানার ওসি সুদীপ বেরা। তাঁকে ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের ধারে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে বুধবার ভোরে মারা যান সুদীপ। সূত্রের খবর, ওই পুলিশ অফিসারের হৃদ্যন্ত্রে আগে থেকেই সমস্যা ছিল। পুলিশকর্তারা মনে করছেন, তিনি নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করালে আরও আগে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করা যেত। এক পুলিশকর্তা জানান, এই ঘটনার কথা উল্লেখ করে নগরপাল বাহিনীর সবাইকে, বিশেষত চল্লিশোর্ধ্বদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর উপরে জোর দিয়েছেন। পাশাপাশি, সকলে যাতে চিকিৎসা বিমা করিয়ে রাখেন, তা-ও দেখতে বলেছেন তিনি।
বর্তমানে কলকাতা পুলিশের কর্মীদের জন্য দু’রকমের চিকিৎসা বিমার সুবিধা রয়েছে। একটি কলকাতা পুলিশের নিজস্ব, অন্যটি রাজ্য সরকারের ‘পশ্চিমবঙ্গ হেল্থ স্কিম’। প্রথমটিতে পুলিশকর্মীদের বছরে প্রায় ১৪ হাজার টাকা প্রিমিয়াম দিতে হয়। অন্যটিতে চিকিৎসা ভাতা বাবদ যে ৫০০ টাকা পুলিশকর্মীরা পান, সেটি ওই বাবদ কেটে নেওয়া হয় তাঁদের বেতন থেকে। লালবাজার সূত্রের খবর, আধিকারিকদের মধ্যে কলকাতা পুলিশের নিজস্ব চিকিৎসা বিমাটি জনপ্রিয়। অন্য দিকে, নিচুতলার পুলিশকর্মীদের অধিকাংশ রয়েছেন ‘পশ্চিমবঙ্গ হেল্থ স্কিম’-এর আওতায়।
পুলিশকর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, কলকাতা পুলিশের নিজস্ব চিকিৎসা বিমা থাকলে বছরে এক বার খুব কম খরচে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো যায়। সেই কারণে বাহিনীর বড় অংশ এই বিমা করান। সোমবারের বৈঠকে নগরপাল স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়ার পরেই থানা এবং বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানেরা তাঁদের অধস্তনদের ওই পরীক্ষা করানোর কথা বলেছেন। একই সঙ্গে সকলে যাতে স্বাস্থ্য বিমার আওতায় আসেন, সেই কাজও শুরু হয়েছে বলে সূত্রের খবর।