ফাইল চিত্র।
পুরভবন থেকে ত্রিপল চুরির মামলায় নাম জড়িয়েছে বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী এবং তাঁর ছোট ভাই সৌমেন্দু অধিকারীর। সেই মামলায় এ বার সিআরপি-র কয়েক জন জওয়ানকে নোটিস পাঠিয়ে তলব করল পুলিশ। ১০ জুন তাঁদের তলব করা হয়েছে, জানিয়েছে কাঁথি থানার পুলিশ।
অভিযোগ, ২৯ মে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কয়েক জন জওয়ানের উপস্থিতিতেই কাঁথি পুরসভা থেকে কয়েক লক্ষ টাকার ত্রাণের ত্রিপল লুট হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তাঁদের চিহ্নিত করেই তলব করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে দাবি। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অমরনাথ কে বলেন, ‘‘পুরসভার প্রশাসক অভিযোগে জানিয়েছিলেন সেখানে সিআরপি কর্মীরা ছিলেন। তাঁদের ভূমিকা ঠিক কী ছিল এবং সে দিনের ঘটনাই বা কী, সে সম্পর্কে জানতেই ওঁদের তলব করা হয়েছে।’’ যে লরিতে চুরির ত্রিপল নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ, সেই লরিটিও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। তার চালক আদালতে গোপন জবানবন্দি দেবেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ঘটনায় শুভেন্দু, সৌমেন্দু এবং পুরসভার দু’জন কর্মী হিমাংশু মান্না ও প্রতাপ দে-র বিরুদ্ধে চুরি, ষড়যন্ত্র, বিপর্যয় মোকাবিলা আইন-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে পুরসভার অস্থায়ী কর্মী প্রতাপ দে-কে। ধৃতকে জেরা করে ২২টি ত্রিপল উদ্ধার হয়েছে বলে এ দিন কাঁথি মহকুমা আদালতে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। এ দিন প্রতাপকে আরও পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে থাকার নির্দেশ দেন বিচারক।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সোমবার বর্ধমানে বলেন, ‘‘শুভেন্দু মুখ্যমন্ত্রীকে হারিয়ে দিয়েছেন, সেটা হজম করতে পারছেন না। তাই তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত হয়েছে।’’ শুভেন্দু, সৌমেন্দুর বাবা তথা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীও বলছেন, ‘‘মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। পুরসভার যে ঘর থেকে ত্রিপল নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করা হচ্ছে, সেই ঘরটি ঠিকাদারের অধীন। ফলে, সেখানে শুভেন্দুদের ব্যক্তিগত ত্রাণ সামগ্রী থাকতেই পারে।’’ শিশিরের দাবি, ‘‘জেলায় সিআরপি নিরাপত্তা পান এ রকমই এক জন ওই দিন ত্রিপল আনতে গিয়েছিলেন।’’ তবে তিনি কে, ভাঙেননি প্রবীণ সাংসদ।
উল্লেখ্য, শুভেন্দু-সহ ‘অধিকারী বাড়ি’র তিন জন এবং জেলার আরও ছয় বিজেপি বিধায়কই এখন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর তথা রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরির কটাক্ষ, ‘‘ঘটনা ঘটেছে বলেই পুলিশ মামলা করেছে। সকলেই জানে কাঁথিতে কারা সিআরপি নিয়ে ঘোরেন।’’