দুর্ঘটনাগ্রস্ত পুলকারটি পরীক্ষা করছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
পোলবায় পুলকার দুর্ঘটনার তদন্তে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত পুলকারটির ‘স্বাস্থ্য’ ভাল তো ছিলই না, এমনকি স্পিডোমিটারের তারও খোলা ছিল। ওই অবস্থাতে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাতে গিয়ে পুলকারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তের পর জানা যাচ্ছে। শুক্রবার গাড়িটির গতিবেগ এতটাই ছিল যে, রাস্তার ধারে ডিভাইডারে তিন বার ধাক্কা মারার পর পাশের নয়নজুলিতে কার্যত উড়ে গিয়ে পড়ে।
অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে আরও একটি বিষয় উঠে এসেছে শনিবার। পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার সময় দিল্লি রোডের উপর মাঝে মধ্যেই গাড়ি-বদল করা হত। কখনও কখনও চালকও বদলে যেতেন। ঘটনার দিনও চালক-বদল হয়েছে বলে পুলিশের একটি সূত্রের দাবি। কেন গাড়ি অথবা চালক বদলের প্রয়োজন পড়ত, তা জানার চেষ্টা চলছে। এর পাশাপাশি গাড়ির ‘স্বাস্থ্য’ ভাল না থাকা সত্ত্বেও কেন খুদে পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তা ব্যবহার করা হচ্ছিল, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ দিন দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটির ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হয়েছে। বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে জানার চেষ্টা চলেছে, দুর্ঘটনার সময় কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল কি না। শুক্রবারই পোলবা থানায় গিয়ে গাড়িটি পরীক্ষা করেন মোটর ভেহিকল্সের অফিসারেরা। গাড়িটির স্বাস্থ্যের বিষয়টি খতিয়ে দেখেন তাঁরা। তাতে ওঁরা খুশি হতে পারেননি বলেই সূত্রের খবর। ওই গাড়ির চাকার অবস্থাও অত্যন্ত খারাপ ছিল। ২০১৮-র ফেব্রুয়ারিতে গাড়িটি ফিটনেস সার্টিফিকেট-এর মেয়াদও শেষ হয়ে গিয়েছে।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির ফরেনসিক পরীক্ষা। নিজস্ব চিত্র
আরও পড়ুন: মস্তিষ্কে রক্ত জমাট, এখনও ভেন্টিলেশনে পোলবার দুই পড়ুয়া
মনে করা হচ্ছে, দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানোর জন্য স্পিডোমিটারের তার খোলা হয়েছিল। ওই গাড়়িটি রোহিত কোলে নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে নেওয়া হয়েছিল। তার নামে এখনও নথিবন্ধ রয়েছে কাগজপত্র। ওই সময়ই গাড়িটির স্বাস্থ্য কেমন ছিল, তা-ও দেখা হচ্ছে।
গত কাল পুলকার দুর্ঘটনায় কবলে পড়ে ১৬ জন পড়ুয়া। তার মধ্যে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ঋষভ, দিব্যাংশু আশঙ্কাজনক অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি। পুলকার-চালক পবিত্র দাসও ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে।
আরও পড়ুন:পাত্র আইএএস, পাত্রী আইপিএস, ভালবাসার দিনে অফিসেই বিয়ে সারলেন ওঁরা
পুলিশের একটি সূত্রে খবর, ওই দিন সকাল পৌনে ৬টা নাগাদ প্রথম পড়ুয়াকে তোলেন পুলকারের চালক। তখনই আধ ঘণ্টা দেরি হয়ে গিয়েছিল বলে অভিভাবকদের সূত্রে খবর। ফলে সময় বাঁচিয়ে গন্তব্যে পৌঁছনোর জন্যে পবিত্র দ্রুতগতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলে মনে করছে পুলিশ।