মেরুকরণেই লন্ডভন্ড বিজেপির সব হিসেব

রায়গঞ্জ লোকসভা আসনের অন্তর্গত কালিয়াগঞ্জ বিধানসভায় বিস্তর এগিয়ে ছিল বিজেপি। লোকসভা ভোটের সেই ৫৭ হাজারের ব্যবধান কমিয়ে কীভাবে ২৪১৪ ভোটে জয় ছিনিয়ে নিল তারা?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৪৭
Share:

ফলপ্রকাশের পর করিমপুরে তৃণমূলের উচ্ছ্বাস। ছবি: পিটিআই।

মর্যাদার লড়াইয়ে কঠিন ছিল খড়্গপুর ( সদর)। তবে অতীত ভোটের হিসেবে তৃণমূলের সামনে কার্যত দুর্ভেদ্য ছিল কালিয়াগঞ্জ। এই দুই আসনে স্বাভাবিক গতি বদলে দিয়েছে তৃণমূল। ঠিক কী ভাবে শাসকদল এই লক্ষ্যে পৌঁছেছে, তা নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছে রাজনৈতিক মহলে।

Advertisement

রায়গঞ্জ লোকসভা আসনের অন্তর্গত কালিয়াগঞ্জ বিধানসভায় বিস্তর এগিয়ে ছিল বিজেপি। লোকসভা ভোটের সেই ৫৭ হাজারের ব্যবধান কমিয়ে কীভাবে ২৪১৪ ভোটে জয় ছিনিয়ে নিল তারা? কালিয়াগঞ্জে প্রায় ৬০ শতাংশ রাজবংশী মানুষ। প্রাথমিকস্তরের বিশ্লেষণে শাসক ও বিরোধী দুই পক্ষই মনে করছে, এনআরসি ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলেছে। লোকসভা ভোটে বিজেপির দিকে থাকা এই অংশে এবার বড় ভাগ বসিয়েছে তৃণমূল। সেই কারণেই একই ভাবে সীমান্তবর্তী এই কেন্দ্রের সংখ্যালঘু ভোটারও আশ্রয় খুঁজেছে তৃণমূলের কাছেই। রাধিকাপুর, মোস্তাফানগর, মালগাঁওয়ের মতো সংখ্যালঘু অঞ্চলে প্রত্যাশিত ‘লিড’ তৃণমূলকে বিপুল ব্যবধান পেরোতে সাহায্য করেছে। তিন-চারজন সাংসদ, দলে দলে কেন্দ্রীয় নেতাদের নামিয়েও এই জমি রক্ষা করতে পারেনি বিজেপি।

প্রায় ৪৭ হাজার ভোটে এগিয়ে থাকা খড়্গপুর সদরেও তৃণমূলের লড়াই সহজ ছিল না। তার উপরে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের ছেড়ে আসা এই বিধানসভা কেন্দ্র তাঁরই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। এই বিধানসভা আসনটি খড়্গপুরের গোটা পুর এলাকাই। এই পুরসভা তৃণমূলের হাতে থাকলেও নিজেদের শক্ত ওয়ার্ডগুলিতে অনেক বেশি এগিয়ে গিয়েছে তৃণমূল। উদ্বাস্তু কলোনি তালবাগিচার ৩টি ওয়ার্ডে একচেটিয়া ভোট পেয়েছে তৃণমূল। গ্রাম লাগোয়া পাঁচবেড়িয়া অঞ্চলের মতো সংখ্যালঘু প্রধান এলাকায় এগিয়ে থেকেছে তৃণমূল।

Advertisement

রেল শহর খড়্গপুরে কাজের সূত্রেই তেলুগু ও ওডিয়া জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্য। রেলের বেসরকারিকরণের মতো বিষয় বিজেপির বিরুদ্ধে যেতে পারে বলে মনে করছে তৃণমূল।

করিমপুর কেন্দ্রে ধর্মীয় মেরুকরণের ইঙ্গিত ছিল। তাতেই জয় তো বটেই ব্যবধান বাড়িয়ে নিল তৃণমূল। বিধানসভা আসন তৃণমূলের হাতে ছিল। তবে শেষ দুটি নির্বাচনের থেকে এখানে ব্যবধান বাড়ানোর জন্য এনআরসি আর বুথস্তরের সংগঠনই আলোচনায়। লোকসভা ভোটে হিন্দু অধ্যুষিত করিমপুর ১ ব্লক বিজেপিকে প্রায় ১০ হাজার ভোটের লিড দিলেও মুসলিম-প্রধান করিমপুর ২ ব্লকে তারা প্রায় ২৪ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিল। এ বারও সেই প্রবণতা অব্যাহত। তবে সম্ভবত এনআরসি-ভীতির কারণেই করিমপুর ১ ব্লকে এ বার বিজেপির বাড়বাড়ন্ত অনেকটাই স্তিমিত। আর করিমপুর ২ ব্লকে তৃণমূলের লিড বেড়ে ২৮ হাজারে পৌঁছেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement