শ্রীজাত জানালেন, বিভেদের রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-স্বরূপই নিজের পদবি ব্যবহার করা বন্ধ করেছেন তিনি।
শিল্পের যেমন রাজনীতি আছে, শিল্পীরও আছে। প্রত্যেক মানুষেরই নিজস্ব রাজনীতি আছে। তাঁর নিজস্ব রাজনীতি রয়েছে। তাঁর কবিতা, গান, নাটক, উপন্যাসেই লুকিয়ে রয়েছে সেই রাজনীতি। আনন্দবাজার অনলাইনের লাইভ অনুষ্ঠানে নিজের রাজনীতি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে অকপট শ্রীজাত। কবির কথায়, ‘‘আমার রাজনীতি সব রকম বিভেদের বিরুদ্ধে গিয়ে দাঁড়াতে চায়।’’ ওই কথার সূত্র ধরেই শ্রীজাত জানালেন, বিভেদের রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-স্বরূপই নিজের পদবি ব্যবহার করা বন্ধ করেছেন তিনি।
শনিবার আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে সান্ধ্য আড্ডায় শ্রীজাত বলেন, ‘‘আমি রাজনীতি করি। দীর্ঘ দিন ধরেই করি। আমার একটা রাজনীতি আছে। প্রত্যেক শিল্পীরই একটা রাজনীতি আছে। আসলে রাজনীতি শব্দটা আমরা ক্যাবিনেটের সঙ্গে একাত্ব করে ফেলেছি। রাজনীতি মানেই কিন্তু দল বা ক্যাবিনেট নয়। রাজনীতি একটা বৃহত্তর বিষয়। আমার কবিতা, গান, নাটক, উপন্যাসে আমার রাজনীতির কথা রয়েছে। কেউ যদি কখনও ভুলবশত আমার লেখা ধারাবাহিক ভাবে পড়ে থাকেন, আমার রাজনীতি স্পষ্ট টের পাবেন। অরাজনৈতিক শিল্প হয় না। আর আমি যে শিল্পের সঙ্গে যুক্ত, তাতে অরাজনীতির কোনও জায়গা নেই।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘আমার রাজনীতি কী, তা এক কথায় বলা মুশকিল। আমার রাজনীতি মানুষের কথা বলতে চায়। বিভেদের বিপরীতে গিয়ে দাঁড়াতে চায়। সমস্ত রকম বিভেদের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান জাহির করেছি, ভবিষ্যতেও করব।’’
শ্রীজাত নিজের রাজনীতি নিয়ে বলার পরই জনৈক দর্শক কবিকে প্রশ্ন করেন, তিনি নিজের পদবি ব্যবহার করেন না কেন? এই প্রশ্নের উত্তরেই আবার বিভেদের রাজনীতির প্রসঙ্গ শ্রীজাত বলেন, ‘‘অন্ধকার লেখাগুচ্ছ’ লেখার সময় আমার অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত হওয়ার পর মার্ক জাকারবার্গকে পাসপোর্ট দেখিয়ে ফেসবুকে ফিরে আসতে হয়েছিল । তার পর থেকেই ফেসবুকে পদবির ব্যবহার শুরু করি। তার আগে অনেকেই জানতেন না আমার পদবি। আমি যে পদবি ব্যবহার করি না। এ-ও এক ধরনের রাজনীতি। আমার মনে হয়, আমাদের দেশে পদবি আসলে বিভেদের জন্য প্রয়োজনীয়। কোন মানুষ কোন জাত বা সম্প্রদায় থেকে আসছেন, তা এই পদবি দিয়ে নির্ধারিত হয়। আমি তো এই বিভেদে বিশ্বাস করি না। কিন্তু এই বিভেদ তো আমি তুলেও দিতে পারব না। আমি শুধু নিজের পদবিটুকুই তুলে দিতে পারি।’’