সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে তদন্তে ঢিলেমির অভিযোগ নিয়ে তদন্তের জন্য ভিজিল্যান্সকে নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। সুপ্রিম কোর্টে সারদা গোষ্ঠীর টাকা নয়ছয় নিয়ে জনস্বার্থের মামলার অন্যতম আবেদনকারী অমিতাভ মজুমদার সিবিআইয়ের ঢিলেমি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে চিঠি দিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ, সারদা, রোজভ্যালি-সহ বিভিন্ন বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার তদন্তে সিবিআই ঢিলেমি করেছে। সেই সূত্রেই ভিজিল্যান্সকে নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। অমিতাভবাবুর এই অভিযোগ সরাসরি সিবিআই ডিরেক্টরের কাছেও পাঠিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিবিআই ২০১৪ সালের মে মাসে তদন্ত শুরু করার পরে চার বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। কয়েক জন ‘প্রভাবশালী’ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তার পরে তদন্তে কিছুটা ভাটা পড়ে বলে অভিযোগ। এমনকী, বার বার অভিযোগ উঠছে, রাজনৈতিক ফায়দার জন্য তদন্ত চালানো হচ্ছে। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের অঙ্ক মাথায় রেখে ব্যবহার করা হচ্ছে সিবিআই-কে। সিবিআই ও ইডি-র বেশ কয়েক জন অফিসারের রাজনৈতিক যোগসাজশের জন্যও তদন্তের অগ্রগতি বাধা পাচ্ছে বলে অভিযোগ। গত দু’তিন বছরে লগ্নি সংস্থার তছরুপের তদন্তে আসা বেশ কয়েক জন সিবিআই অফিসারকে বদল করা হয়েছে। অতি সম্প্রতি বদলি করা হয়েছে এক অফিসারকে।
অমিতাভবাবু চিঠিতে অভিযোগ করেছেন, যে-বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের ব্যাপারটা শীর্ষ আদালত দেখতে বলেছিল, চার বছরে তার ধারকাছ দিয়েও যায়নি সিবিআই। যাঁরা প্রতারিত, তদন্তের এই ঢিলেমি নিয়ে তাঁদের প্রশ্ন তোলার আইনসঙ্গত অধিকার রয়েছে। শুধু সারদা, রোজভ্যালি নয়, প্রয়াগ, এমপিএস, টাওয়ার, আইকোর, চক্রের মতো অন্য যে-সব সংস্থা এ ভাবে বাজার থেকে কোটি কোটি টাকা তুলেছে, তাদের তালিকাও দিয়েছেন তিনি।
ইতিমধ্যে সিবিআইয়ের ডিরেক্টর অলোক বর্মা এবং স্পেশ্যাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার অভ্যন্তরীণ দ্বৈরথ প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে। ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে ভিজিল্যান্স দফতরেই অভিযোগ জানিয়েছেন রাকেশ। দিল্লিতে বসে রাকেশই এখন সারদা-সহ বিভিন্ন লগ্নি সংস্থার তদন্ত দেখভাল করছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন বলেও পরিচিত। রাকেশ রাশ হাতে নেওয়ার পরে অতি সম্প্রতি তদন্তে আবার গতি এসেছে। এই অবস্থায় গত চার বছরে তদন্তে ঢিলেমি নিয়ে ওঠা অভিযোগ ভিজিল্যান্সে পাঠানোর আলাদা তাৎপর্য রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সিবিআইয়ের একাংশ জানিয়েছে, পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অমিতাভবাবুর চিঠিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখার বড় কারণ হল, তিনিই কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন আর্থিক হিসেব দিয়ে সিবিআই এবং ইডি-কে তদন্তে সাহায্য করেছেন। সারদায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে তিনি ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন তিনি।