কেন্দ্রের চিঠির প্রেক্ষিতে সম্প্রতি লিখিত জবাব দিয়েছে নবান্ন। প্রতীকী ছবি।
নানান গরমিল বা অনিয়ম হয়েছে বলে জানিয়ে পত্রাঘাতের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় সেই সব গরমিলের ঘটনায় রাজ্য সরকারকে এফআইআর করার কথাও বলেছে কেন্দ্র। কিন্তু ঠিক কার বা কাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করতে বলা হচ্ছে, পাল্টা চিঠিতে তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চেয়েছে রাজ্য। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কেন্দ্রের চিঠির প্রেক্ষিতে সম্প্রতি লিখিত জবাব দিয়েছে নবান্ন। বাড়ি কর্মসূচিতে ইতিমধ্যে কী ধরনের সংশোধনমূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে, রাজ্য তার ব্যাখ্যা দিয়েছে লিখিত ভাবেই। সেই সঙ্গে আটকে থাকা অর্থও চাওয়া হয়েছে কেন্দ্রের কাছে।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে চিঠি দিয়ে কেন্দ্র জানিয়েছিল, জানুয়ারিতে বাংলায় আসা কেন্দ্রীয় দল এই রাজ্যে আবাস প্রকল্প পরিচালনায় বিভিন্ন ধরনের গরমিল ধরেছে। ১০টি জেলার মধ্যে সাতটিতেই সেই সব অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে বলে নবান্নকে জানিয়েছিল কেন্দ্র। তার ভিত্তিতেই কেন্দ্রের তরফে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের সুপারিশ করা হয়েছিল। পঞ্চায়েত দফতর সূত্রের খবর, নবান্ন সেই চিঠির যে-প্রত্যুত্তর দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, প্রায় প্রতিটি অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করেছে। কোন ঘটনায় কী ধরনের পদক্ষেপ করা হয়েছে, তারও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের ওই চিঠি পাওয়ার পরে রাজ্যের অভিযোগ ছিল, কেন্দ্রীয় দলের বেশ কিছু ‘অনুসন্ধান’ বোঝা যাচ্ছে না। সেই সব অভিযোগ কোন এলাকায় কাদের বিরুদ্ধে উঠেছে এবং কাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে হবে, তা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে।
রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, “কেন্দ্রের চিঠির অনুচ্ছেদ ধরে ধরে জবাব দিয়েছি আমরা। আগেই এই সব পদক্ষেপের তথ্য কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল। লিখিত ভাবে তা আবার পাঠানো হয়েছে। যেখানে অস্পষ্টতা রয়েছে, তারও সবিস্তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।”
পঞ্চায়েত দফতর সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে যাচাই করে প্রায় ১১ লক্ষ উপভোক্তাকে বাড়ির চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রের তরফে প্রথম কিস্তির টাকা পেলেই কাজ শুরু করা সম্ভব। কিন্তু সেই কেন্দ্রীয় বরাদ্দ আটকে থাকায় এখনও কাজ শুরু করা যায়নি। পাশাপাশি, রাজ্যের ভাগের অর্থও বরাদ্দ করা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় কেন্দ্রকে বরাদ্দ টাকা দ্রুত ছাড়ার আর্জিও জানিয়েছে রাজ্য।
পঞ্চায়েতমন্ত্রীর অভিযোগ, “গত নির্বাচনের পর থেকে ৫১টি কেন্দ্রীয় দল বারে বারে রাজ্যে ঘুরে গিয়েছে। অথচ পশ্চিমবঙ্গ সরকার সব ধরনের সংশোধনমূলক পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই করেছে। যা অন্য কোনও রাজ্য এত নিখুঁত ভাবে করতে পারেনি। তার পরেও গরিব মানুষের প্রাপ্য অর্থ আটকে রাখা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা তো এ বারেও উত্তর দিলাম। এখন দেখা যাক, কেন্দ্র কী পদক্ষেপ করে।”