ফাইল চিত্র।
কাটমানি নিয়ে বিতর্ক রাজ্যের সর্বত্র। তাতে সবচেয়ে বেশি নাম জড়িয়েছে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনার। কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ঘর পাইয়ে দিয়ে ‘কাটমানি’ খাওয়ার অভিযোগে শাসক দলের নেতাদের ঘেরাও হতে হয়েছে প্রায় সব জেলাতেই। এই পরিস্থিতিতে চলতি অর্থবর্ষে এই প্রকল্প আপাতত স্থগিত করে দিয়েছে পঞ্চায়েত দফতর। অর্থবর্ষের চার মাস কেটে গেলেও নয়া বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়নি এখনও। জেলাগুলিকে বলা হয়েছে, কাটমানি বিক্ষোভ থিতিয়ে গেলে তবেই বাড়ি তৈরি শুরু করা যাবে।
গত আর্থিক বছরে গ্রামীণ আবাস প্রকল্পে কেন্দ্র ৫ লক্ষ ৮৬ হাজার বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিল। রাজ্যের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ৭১৪৪ কোটি টাকা। বছর শেষে রাজ্য ৫ লক্ষ ১১ হাজার বাড়ি তৈরি করতে পেরেছে। চলতি অর্থবর্ষে সারা দেশে ৬০ লক্ষ বাড়ি তৈরি হবে। রাজ্য ৮ লক্ষ বাড়ি তৈরির অনুমোদন পেয়েছে। কাটমানি বিক্ষোভের জেরে বাড়ি তৈরি বন্ধ থাকলে সেই লক্ষ্যমাত্রা কী ভাবে পূরণ করা যাবে তা নিয়ে চিন্তায় পঞ্চায়েত দফতরের কর্তারা। পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘বাড়ি তৈরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এমন নয়। পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রকল্পের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এ বারও লক্ষ্যমাত্রা ছোঁব। তবে সময় বুঝে বাড়ি তৈরি শুরু হবে।’’
দফতরের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, সোশিও ইকনমিক কাস্ট সেনসাস (এসইসিসি) অনুযায়ী কারা পাকা বাড়ি পাবেন, তার স্থায়ী তালিকা তৈরি হয়ে আছে। প্রতিবার গ্রাম সংসদের বৈঠকে উপভোক্তাদের তালিকা চূড়ান্ত হয়। কিন্তু কাটমানি বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পরে পঞ্চায়েত দফতর গ্রাম সংসদের বৈঠকই বাতিল করে দিয়েছে। যদিও সরকারি ভাবে বলা হয়েছে, বর্ষা এসে যাওয়ায় বৈঠক স্থগিত করে দেওয়া হল।
আবাস যোজনার সঙ্গে যুক্ত এক কর্তার কথায়, ‘‘গ্রাম সংসদের বৈঠক না হওয়ায় উপভোক্তার তালিকা চূড়ান্ত করা সমস্যা। তা ছাড়া, লোকসভা ভোট মেটার পরে এখনও পঞ্চায়েতগুলি জোরকদমে কাজ শুরু করেনি। তাই কিছু দিন বাড়ি তৈরি আটকে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে জেলাগুলিকে তালিকা তৈরি করতে বলা হবে।’’