আরামবাগের মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সুকান্ত-শুভেন্দুরা। ছবি: সংগৃহীত।
অনেক দিন পরে রাজ্যে এলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজনৈতিক কর্মসূচির হিসাব ধরলে গত বিধানসভা নির্বাচনের পরে আর বাংলায় আসেননি তিনি। মাঝে দু’টি কর্মসূচিতে রাজ্যে আসার কথা থাকলেও বাতিল হয়। গত বছর হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস উদ্বোধনে বাংলায় আসার কথা ছিল তাঁর। সে দিন সকালেই মাতৃবিয়োগ হয় মোদীর। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন ভার্চুয়াল মাধ্যমে। এর পরে ব্রিগেডে গীতপাঠের অনুষ্ঠানে আসার কথা থাকলেও একে বারে শেষ মুহূর্তে তা বাতিল হয়ে যায়। ফলে মোদীর শুক্র-শনির সফর নিয়ে অনেক আগ্রহ ছিল রাজ্য বিজেপি নেতাদের। তবে তাঁর সঙ্গে রাজ্যের শীর্ষ নেতাদেরও সে ভাবে কথা বলার সুযোগ হল না শুক্রবার। শনিবারও হওয়ার সম্ভাবনা কম।
মোদী শুক্রবার আরামবাগে পৌঁছেই সোজা চলে যান সরকারি কর্মসূচির মঞ্চে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসের অনুষ্ঠানে অবশ্য হাজির ছিলেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সাংসদ সৌমিত্র খাঁ এবং কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকেও দেখা যায়। সেই সভায় মোদী ছাড়া বক্তা ছিলেন শুধু শান্তনু। তবে এই সভায় এসে সুকান্তকে দেখেই কুশল সংবাদ নেন মোদী। কাছে ডেকে জানতে চান, তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে। সম্প্রতি সন্দেশখালিতে আন্দোলনের সময়ে অসুস্থ হয়ে কয়েকদিন হাসপাতালে কাটান সুকান্ত। মোদী সুকান্তের সঙ্গে কথা বলার সময়ে কাছেই থাকা এক রাজ্য নেতা বলেন, ‘‘মোদীজি সুকান্তদা এখন কেমন আছেন, কোনও সমস্যা রয়েছে কি না তার খোঁজ নেন। জানতে চান হাসাপাতালে থাকার সময়ে চিকিৎসকেরা যা বলেছেন তা মেনে চলছেন কি না।’’ এই প্রসঙ্গে সুকান্তকে প্রশ্ন করা হলে তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘মোদীজির স্মৃতি অত্যন্ত প্রখর। কেউ অসুস্থ হয়েছেন জানলে, তাঁর সঙ্গে দেখা হওয়ার পরে খোঁজ নেন। এমনকি, পরিবারের কেউ অসুস্থ থাকলেও তিনি খোঁজখবর নেন।’’
সুকান্তের সঙ্গে মোদীকে আরও এক বার কথা বলতে দেখা যায় দলীয় মঞ্চে। বক্তৃতার শেষে মঞ্চ ছাড়ার আগে প্রধানমন্ত্রী কিছু ক্ষণ দাঁড়ান। সেই সময়ে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা আসনের সাংসদ সুরেন্দ্র অহলুওয়ালিয়া মোদীর দিকে লজেন্স এগিয়ে দেন। লজেন্স নিয়ে মুখে পোড়েন মোদী। সেই সময়ে সুকান্ত, শুভেন্দুকে কিছু বলতেও দেখা যায় মোদীকে। পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা এক নেতা জানান, শনিবার সকলের সঙ্গে কৃষ্ণনগরের সভায় যে দেখা হবে সেটাই শুধু জানান মোদী।
মোদীকে লজেন্স দিচ্ছেন অহলুওয়ালিয়া। ছবি: সংগৃহীত।
রাতে কলকাতাতেই থাকছেন প্রধানমন্ত্রী। রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পরে সে ভাবে কোনও ঘোষিত কর্মসূচি নেই। রাজ্য নেতাদের একাংশ মনে করেছিলেন মোদী অন্তত শীর্ষ নেতৃত্বের ডেকে নিতে পারেন। রাজভবনে কোনও বৈঠক হতে পারে বলে দলের মধ্যেও জল্পনা ছিল। কিন্তু তেমন সম্ভাবনা যে নেই সেটা বুঝিয়েই মোদী আরামবাগের সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে নেতাদের বুঝিয়ে দেন আবার দেখা হবে শনিবার কৃষ্ণনগরের সভামঞ্চে।