প্রতীকী ছবি।
জনসংযোগের লক্ষ্যে এ বার ‘গণভোজে’র আয়োজন করছে তৃণমূল।
রাজ্যের তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের কাছে পৌঁছতে ১২৩ টি বিধানসভা কেন্দ্র বাছাই করা এই কর্মসূচি আবশ্যিক করা হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার থেকে টানা একমাস চলবে। দলের এই অংশের নেতাদের সামনে রেখে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক মতবিনিময় করার কথা ভেবেছে তৃণমূল। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এ ভাবেই এই অংশকে কাছে টানতে চাইছে শাসকদল।
তৃণমূলের পরামর্শদাতা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এই অংশে দলের জমি হারানোর বিষয়টি বিশেষভাবে চিহ্নিত করেছিলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। তার সংস্থা তখন থেকেই এই ক্ষত মেরামতিতে উদ্যোগী হয়েছিল। তফসিলি জাতি ও জনজাতি অংশে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য দলের এই শাখায় নেতা ও মুখ বদল করা হয়েছিল তখনই। নির্বাচনের আগে সেই বৃত্ত পূর্ণ করতে মরিয়া তৃণমূল এই পিকনিকের ব্যবস্থা করছে। তবে এই সংরক্ষিত আসনেই শুধু নয়, যে সাধারণ আসনে এই অংশের তুলনায় ভাল ভোট রয়েছে, সেখানেই এই ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, কমবেশি আড়াই হাজার গ্রাম চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট দলীয় নেতাদের কাছে গোটা পরিকল্পনা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের তফসিলি সংরক্ষিত আসনগুলিতে জোর ধাক্কা খেয়েছিল তৃণমূল। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত আসনে একেবারে কাঁধের কাছে নিশ্বাস ফেলেছে বিজেপি। তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত ৬৮ টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ৩৪ টি আসন। এবং বিজেপি পেয়েছিল ৩৩ টি আসন। কিন্তু দুই দলের প্রাপ্ত ভোটে কোনও ফারাকই ছিল না। এই আসনগুলির মধ্যে মাত্র একটিতে এগিয়েছিল কংগ্রেস। তবে তাদের ভোট ছিল খুবই কম মাত্র ২ শতাংশ। আর ৬ শতাংশ ভোট পেলেও কোনও আসন পায়নি বামেরা।
লোকসভা ভোটের হিসেবে তফসিলি জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায়ও প্রায় খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে তৃণমূলকে। তফসিলি জনজাতি সংরক্ষিত ১৬ টি আসনের মধ্যে তৃণমূল এগিয়েছিল ৩ টিতে। বাকি সবগুলিতেই বিজেপি। এই অংশের ভোটের বিজেপি পেয়েছিল ৪৮ শতাংশ। তৃণমূলের থেকে ১০ শতাংশ বেশি। আসন না পেলেও বামেদের ভোট ছিল ৫ শতাংশ। পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের যে বিপর্যয় তার অন্যতম প্রধান কারণ তশপিলি জাতি ও জনজাতি অংশের ভোট না পাওয়া।