ফাইল চিত্র।
অতিমারির আবহে এ বার দুর্গাপুজো, কালীপুজো, বর্ষবরণে স্বাস্থ্যবিধি কতটা মান্য করা হবে, সেই বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করে এবং আদালতের নির্দেশ চেয়ে মামলা হয়েছিল। এ বার গঙ্গাসাগর মেলায় ভিড় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত সূত্রের খবর, সাগরমেলা প্রাঙ্গণ ও বাবুঘাটে মেলার মাঠকে ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ হিসেবে চিহ্নিত করার আর্জি জানানো হয়েছে সেই মামলায়। আজ, মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি হতে পারে।
ঘটনাচক্রে, সোমবারেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এ বার গঙ্গাসাগর মেলা হবে খুবই ছোট আকারে। সেখানে ভিআইপি-দের যাতায়াতের অনুমতি দেওয়া হবে না। এমনকি তিনি নিজেও এ বছর সাগরে যাচ্ছেন না। পৌষসংক্রান্তিতে সাগরসঙ্গমে স্নান করতে আসেন দেশের নানা প্রান্তের পুণ্যার্থীরা। তবে মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধ জানিয়েছেন, অতিমারি পরিস্থিতির জন্য এ বার মেলায় না-আসাই ভাল। বিকল্প হিসেবে ই-স্নান ও ই-পুজোর ব্যবস্থা রাখছে প্রশাসন। মমতা বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনের পাশাপাশি ভারত সেবাশ্রম-সহ বিভিন্ন সংগঠনের হাজার ছয়েক স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন।’’ এ বছর পুণ্যস্নানের সময় ১৪ জানুয়ারি সকাল ৬টা ২ মিনিট থেকে ১৫ জানুয়ারি সকাল ৬টা ২ মিনিট পর্যন্ত।
প্রশাসন জানিয়েছে, প্রতি বছর গঙ্গাসাগরে ৫০ লক্ষ পুণ্যার্থীর সমাগম হয়। এ বছর তা কমলেও ৩০ লক্ষের কম হবে না, তাই সতর্ক থাকতে হবে। ১৩টি মেডিক্যাল স্ক্রিনিং ক্যাম্প হবে। থাকছে ১৩টি আরটিপিসিআর কেন্দ্র। পাশাপাশি সাগরে আইসিইউ, ৬০০ শয্যার হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে। আটটি সেফ হোম, ১১টি কোয়রান্টিন সেন্টার এবং পাঁচটি আইসোলেশন সেন্টার গড়ে তোলা হচ্ছে। মাস্ক পরা হচ্ছে কি না, দেখার জন্য ‘সাগর বন্ধু’ নামে একটি দল গড়া হচ্ছে। সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরাকে বলা হয়েছে, দলের ছেলেদের এ কাজে নামাতে।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন গঙ্গাসাগরকে রাজনীতিমুক্ত রাখার কথাও বলেছেন। তিনি জানান, ভিড় থেকে অশান্তি, গোলমাল এবং কোনও সংগঠনের পক্ষে ঘৃণা যাতে ছড়ানো না-হয়, সেই ব্যাপারে পুলিশ সক্রিয় থাকবে। এ জন্য বিবেক সহায়, সুপ্রতিম সরকার, অমিত জাভালগি-সহ কয়েক জন পুলিশকর্তাকে আলাদা করে দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘সকলেই আমাদের অতিথি। কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা যাবে না। প্রয়োজনে দেশোয়ালি ভাষায় বুঝিয়ে বলতে হবে।’’ পুণ্যার্থীদের যাতায়াতের জন্য প্রায় ২৭৫০টি বাস থাকছে। অতিরিক্ত ট্রেন চালানোর জন্য রেলের সঙ্গে কথা বলছে রাজ্য।