ফাইল চিত্র।
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হল কলকাতা হাই কোর্টে। রাজ্যপাল সংবিধান বিরোধী কাজ করছেন, এই মর্মে মঙ্গলবার একটি জনস্বার্থ মামলা করেন আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার। রাজ্যপালকে বদলি করার দাবিও জানিয়েছেন ওই আইনজীবী।
রাজ্য এবং রাজ্যপালের ‘সঙ্ঘাত’ নতুন কোনও বিষয় নয়। বার বার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে নানা বিষয় নিয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছে ধনখড়কে। কখনও কখনও সেই ‘সঙ্ঘাত’ চরম পর্যায়েও পৌঁছেছে। সাম্প্রতিক কালে পেগাসাস-কাণ্ডে রাজ্য সরকার গঠিত তদন্ত কমিশন, রাজ্যের শিল্পক্ষেত্রে বিনিয়োগ এবং বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (বিজিবিএস) আয়োজনের খরচ, মা ক্যান্টিন চালানোর খরচ, গোর্খাল্যান্ড আঞ্চলিক প্রশাসন, এরোট্রোপলিস প্রকল্প, রাজ্য অর্থ কমিশন, অতিমারি পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সরঞ্জাম কেনার খরচ-সহ একাধিক বিষয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন ধনখড়। অভিযোগ তোলেন, এ সব বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে উত্তর চেয়েও পায়নি রাজভবন। যা নিয়ে রাজ্য বনাম রাজ্যপালের ‘সঙ্ঘাত’ একটা নতুন মাত্রায় পৌঁছয়।
গত ২৫ জানুয়ারি বিধানসভা চত্বরে অম্বেডকর মূর্তির নীচে রাজ্যপাল রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানান। ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’, রাজ্যের আইনকানুন-সহ একাধিক বিষয়ে সাংবাদিক বৈঠকে তোপ দেগেছিলেন তিনি। ধনখড় বলেন, “বাংলায় বিপদের মুখে গণতন্ত্র! ভোট পরবর্তী হিংসাই সেই ঘটনার প্রমাণ।” রাজ্যপাল আরও বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। রাজ্যে আইনের শাসন নেই। শাসকের আইন চলছে।” রাজ্যের অফিসারদের সংবিধান মেনে কাজ করার পরামর্শও দেন রাজ্যপাল। তাঁর এই ধরনের মন্তব্য নিয়ে সরাসরি আপত্তি জানিয়েছিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
একের পর বিষয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সম্প্রতি সংসদেও সরব হন তৃণমূলের সাংসদরা। এমনকি রাজ্যপালের অপসারণের আবেদন জানিয়ে সরাসরি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে আবেদনও করেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছেও মৌখিক আবেদন জানান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়।