—প্রতীকী ছবি।
আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজে সরকারি কর্মীর নাকি বেজায় অভাব। তাই, নির্বাচনের কাজে শারীরিক প্রতিবন্ধী সরকারি শিক্ষকদেরও ডাক পড়তে শুরু করেছে। স্বভাবতই তাঁরা ক্ষুব্ধ। নির্বাচনের কাজে অব্যাহতি চেয়ে তাঁদের বেশিরভাগই চিঠি পাঠাচ্ছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে।
অভিযোগ, এর আগেও লোকসভা, বিধানসভা এবং পঞ্চায়েত ভোটে এর পুনরাবৃত্তি হয়েছে। এ বারেও ৬০, ৭০ এমনকি ৮০ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষকদেরও পঞ্চায়েত ভোটে ডিউটি করার জন্য প্রশিক্ষণের চিঠি পাঠাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ডিউটি মকুবের আর্জি জানিয়ে তাঁদের বেশিরভাগই সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন অফিসে গিয়ে পাল্টা চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু মকুব হবে কি না, সেই উত্তর এখনও মেলেনি।
বীরভূমের ময়ূরেশ্বরের একটি স্কুলের বাংলার শিক্ষক পূর্ণচন্দ্র দাসের অভিযোগ, তিনি ৭০ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাঁর হাঁটাচলায় সমস্যা রয়েছে। প্রতিবন্ধীদের বিশেষ গাড়িতে করে স্কুলে যাতায়াত করেন। পূর্ণচন্দ্র বলেন, “গত বার লোকসভা নির্বাচনেও আমার ডিউটি পড়েছিল। তখন জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে মকুব করিয়েছিলাম। এ বার ফের ডিউটি মকুবের জন্য জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছি। এখনও উত্তর মেলেনি।”
নদিয়ার আড়ংঘাটার একটি স্কুলের প্রতিবন্ধী শিক্ষক শুভঙ্কর চৌধুরির কথায়, “গত বিধানসভা ভোটে জেলা প্রশাসনকে চিঠি লিখেও লাভ হয়নি। অনেক অসুবিধার মধ্যে ভোটের কাজ করতে হয়েছিল। দেখেছি হুইল চেয়ারে করেও এক প্রতিবন্ধী শিক্ষককে নির্বাচনে কাজ করতে হয়েছে। আমার সামনেই পঞ্চায়েত ভোটের প্রশিক্ষণ। না গেলে তো আবার শোকজ়-এর চিঠি পাঠাবে।” জেলা প্রশাসনগুলির পাল্টা দাবি, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে জেলা জুড়ে ভোট কর্মীর অভাব। বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘‘কোনও ভোটকর্মীর শারীরিক প্রতিবন্ধকতা যদি তাঁর ভোটের কাজে সমস্যা তৈরি করে, তবে আমরা নিশ্চয়ই তা বিবেচনা করে দেখব।’’
শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারীর দাবি, “শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষকদের ভোটে অংশগ্রহণ করতে হবে না, এই মর্মে নির্বাচন কমিশনকে বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। তা হলে আর শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জেলার প্রশাসনিক অফিসে দৌড়াদৌড়ি করতে হবে না।”