জীবনের ফোন কি জীবিত থাকবে? — প্রতীকী চিত্র।
বিপদ বুঝে দু’টি ফোন পুকুরে ছুড়ে ফেলে দেন তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। বড়ঞার বিধায়কের একটি ফোন উদ্ধারও করে ফেলেছে সিবিআই। আরও একটি ফোনের খোঁজ চলছে পুকুরে নেমে। পুকুরের পাঁকে ঢুকে রয়েছে কি না, সেই খোঁজও করছে সিবিআই।
ফোন উদ্ধার হলেও সেটি থেকে তথ্য উদ্ধার করা কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে সংশয়ে সিবিআই আধিকারিকেরা। ফোন উদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গেই যাতে তথ্য সংরক্ষণ করা যায়, তার জন্য এক বিশেষজ্ঞকেও ডেকে আনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীদের আশঙ্কা, সফ্টঅয়্যার সংক্রান্ত কোনও সমস্যা না হলেও কাদাজলে ডুবে থাকার কারণে হার্ডঅয়্যারের একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি, ফোনের সমস্ত তথ্যও মুছে যেতে পারে।
এ বিষয়ে সফ্টঅয়্যার বিশেষজ্ঞ সোহিনী মুখোপাধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘হার্ডঅয়্যার যদি ঠিকঠাক থাকে, তবে তথ্য পেতে কোনও অসুবিধা নেই। তবে যত দ্রুত সম্ভব জল থেকে বার করতে হবে।’’ একটি নামী মোবাইল সংস্থার এক কারিগরও বলছেন, ‘‘মোবাইল চালু অবস্থায় কাদায় ফেলা হলে ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। মোবাইলের একাধিক আইসি ও ইন্টার্নাল স্টোরেজে স্লট নষ্ট হয়ে গেলে তা থেকে তথ্য উদ্ধার করা বেশ কষ্টকর।’’
তবে জীবনের ছুড়ে ফেলা মোবাইলটি যদি আই ফোন হয়ে থাকে তবে জলে ডুবে মৃত্যুর সম্ভাবনা খুব বেশি নয়। তবে জীবনের ফোন দু’টি আইফোন হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি কারণ তাঁকে যে দু’টি ফোন ব্যবহার করতে দেখা যেত সেগুলি অ্যাপেলের আধুনিকতম মডেল। তাতেই চিন্তা জীবনের। কারণ, কিছু কাল আগেই এমন একটি খবর পাওয়া গিয়েছিল যে, ৪৬৫ দিন ধরে সমুদ্রের তলায় পড়ে থাকা ফোন উদ্ধারের পরে কাজ করে। নৌকাবিহার করার সময়, বছর ৩৯-এর ক্লেয়ার অ্যাটফিল্ডের হাত ফসকে ২০২১ সালের অগস্ট মাসে জলে পড়ে তাঁর আইফোনটি। ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন ক্লেয়ার।
তার পর হঠাৎ করেই একদিন, সমুদ্রের ধারে পোষ্যকে নিয়ে ঘুরতে আসা এক ব্যক্তির চোখে পড়ে সেই ফোনটি। সেটা চালু করে সেখান থেকে ক্লেয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ওই ব্যক্তি। ফোন ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বসিত ক্লেয়ার সংবাদমাধ্যমকে জানান, “৪৬৫ দিন ধরে জলে পড়ে থাকা ফোন, একেবারে সচল! আমি দেখে তাজ্জব হয়ে গিয়েছি। ফোনের মধ্যে জল ঢুকে গেলে ফোন কোনও ভাবেই আবার আগের মতো চলতে পারে না বলেই আমার বিশ্বাস ছিল। আমি বিশ্বাসই করতে পারিনি যে ফোনটা ‘অন’ হবে।”
এমনটা যদি বড়ঞার ক্ষেত্রেও হয় তবে জীবনকৃষ্ণ খুশি হবেন কি না কে জানে! তবে এটা নিশ্চিত যে, সিবিআই খুবই আনন্দ পাবে।