প্রতীকী ছবি।
কথা দিয়েও উত্তরের চা বাগান দেখতে এল না কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি আয়োগের প্রতিনিধিদল। মোদী জামানায় যোজনা কমিশনের অবসান ঘটিয়ে নীতি আয়োগ তৈরি করা হয়েছে। সেই নীতি আয়োগের প্রতিনিধিরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে সেখানকার শিল্প পরিকাঠামো দেখছে। তেমনই একটি দলের বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গে আসার কথা ছিল। গত বুধবার দলটির শিলিগুড়িতে পৌঁছনোর কথা ছিল। সূত্রের খবর, বিহারের কাটিহারে রেলের বিভিন্ন উদ্যোগ দেখেই দলটি দিল্লি ফিরেছে। আবার কবে দলটি উত্তরবঙ্গে আসবে বা আদৌও আসবে কি না, তা নিয়ে কিছুই জানানো হয়নি। উত্তরবঙ্গে চা শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি দেখতে আসার কথা জানিয়েছিল নীতি আয়োগ। বৈঠক হওয়ার কথা ছিল চা পর্ষদ তথা টি বোর্ডের সঙ্গে। কেন দলটি সফর বাতিল করল, তা জানে না টি বোর্ডও। টি বোর্ডের এক আধিকারিকের কথায়, “একেবারে শেষ মুহূর্তে আমাদের জানানো হয়েছে, নীতি আয়োগের প্রতিনিধিরা আসছেন না। এর বেশি কিছু জানা নেই।”
চা শিল্প নিয়ে কেন্দ্র উদাসীন— এমন অভিযোগ প্রায়ই করে থাকে বিরোধী দলগুলি। তাদের বক্তব্য, চা শিল্পে যেখানে ভাটার টান চলছে, রফতানি কমে যাওয়ায় একদিনে রাজস্ব কমেছে, সেই সময়েও দীর্ঘদিন ধরে চা পাতার গুণমান বৃদ্ধির জন্য তেমন কেন্দ্রীয় সাহায্য। ডুয়ার্সের চায়ের ব্র্যান্ড তৈরি হলেও তা বিপণনে কেন্দ্র উদ্যোগী হয়নি বলে দাবি। ছোট চা বাগানের পাতার দাম ক্রমশ কমছে এবং উত্তরবঙ্গে অন্তত ২০টির বেশি চা বাগান ধুঁকছে, যেগুলির পুনরুজ্জীবনের জন্য কেন্দ্রীয় সাহায্য প্রয়োজন বলে দাবি। এই পরিস্থিতিতে দেশের শীর্ষ নীতি নির্ধারক সংস্থার প্রতিনিধিরা চা বাগানের হাল দেখতে আসছেন শুনে খুশি হয়েছিলেন শিল্পের সকলেই। সব ধরনের চা প্রস্তুতকারীকেই ডেকেছিল নীতি আয়োগ। তিন দিন ধরে কয়েক দফায় বৈঠক এবং পরিদর্শন হওয়ার কথা ছিল। বিভিন্ন সংগঠন নিজেদের দাবি, প্রস্তাব এবং সমস্যার কথা বলতে তৈরি হয়ে ছিলেন। সফর বাতিল হওয়ায় তার কিছুই হল না।
ছোট চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “আমরা হতাশ। চা শিল্পের পরিস্থিতি না দেখে, না শুনে যদি কোনও খসড়া হয়, তা হলে তার সঙ্গে বাস্তবের মিল থাকবে না।’’ প্রদেশ তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণকুমার কল্যাণী বলেন, “কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বরাবরই উত্তরবঙ্গের চা শিল্পকে বঞ্চিত করেছে। ফের সেই বঞ্চনারই সাক্ষী থাকলাম।” জেলা বিজেপির সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “সরকারি বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারব না। তবে হয়তো সফর বাতিল হয়নি, স্থগিত হয়েছে।”