ফাইল চিত্র।
প্রতিটি দফতরের সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য সম্প্রতি বৈঠক ডেকেছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। কিন্তু তার পরেও নানা ধরনের ফাঁক থেকে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। মুখ্যসচিবের সমন্বয়-বৈঠক সত্ত্বেও বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এতে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে প্রশাসনিক শিবিরেরই একাংশের পর্যবেক্ষণ। যেমন কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার (হোম পার) দফতরের অভিযোগ, নিয়ম অনুযায়ী কোনও সরকারি কর্মীর পদোন্নতির ব্যাপারে যে-দফতরকে (‘হোম পার’) সর্বাগ্রে জানানোর কথা ও তাদের সায় নেওয়ার কথা, তাদের না-জানিয়েই পদোন্নতির প্রশিক্ষণ নিয়ে দফতরে যোগ দিচ্ছেন অনেক কর্মী।
সাধারণত সচিবালয়ে কর্মরত ‘গ্রুপ-ডি’ কর্মীদের মধ্যে যাঁরা এলডিএ পদে যাওয়ার যোগ্য, তাঁদের কম্পিউটার টাইপিংয়ের পরীক্ষা দিতে হয়। পাশ করলে এলডিএ হতে পারেন সেই কর্মী। নবান্ন লক্ষ করেছে, কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার দফতরকে না-জানিয়েই কিছু দফতর
যোগ্য কর্মীদের পরীক্ষার জন্য অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (এটিআই)-এ পাঠিয়ে দিচ্ছে। ফলে নিয়ন্ত্রক দফতর হিসেবে ‘হোম পার’-এর কাছে সেই তথ্য থাকছে না। ‘হোম পার’ জানিয়েছে, তাদের এড়িয়ে এমন পদক্ষেপ করলে কোনও প্রার্থী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও পদোন্নতির প্রশ্নে তাঁকে সফল বলে বিবেচনা করা হবে না।
কোন দফতরে ক’জন কর্মী-অফিসার আছেন, কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার দফতর অতীতে একাধিক বার সেই তথ্য চেয়েছিল। নির্দিষ্ট বয়ানে সব দফতরকেই সেই তথ্য জমা দিতে হয়েছে। প্রশাসনিক শিবিরের অনেকের ধারণা, সুষ্ঠু খরচের স্বার্থেই কর্মীদের খতিয়ান রাখতে চাইছে সরকার। কোনও ভাবেই এই অবস্থানের কোনও বিচ্যুতি হোক, তা চাইছে না রাজ্য।
সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে তৃণমূল প্রভাবিত রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠন। তাদের প্রবীণ নেতা মনোজ চক্রবর্তী জানান, সরকার যে-বিধি স্থির করে দিয়েছে, তা মেনে চলা উচিত। এখানে ভিন্ন মনোভাবের কোনও জায়গা নেই।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ‘হোম পার’ আগেই সব দফতরকে নির্দেশ দিয়েছিল, গ্রুপ-ডি পদ থেকে যে-সব যোগ্য কর্মীকে লোয়ার ডিভিশন অ্যাসিস্ট্যান্ট (এলডিএ) বা অবর বর্গীয় সহায়ক হিসেবে পদোন্নতির সুযোগ দেওয়া হবে, তাঁদের বিষয়ে তথ্য তাদের জানাতে হবে। কিন্তু সেই নির্দেশ যথাযথ ভাবে মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। কেন মানা হচ্ছে না, তা নিয়েও সম্প্রতি প্রশ্ন তুলেছে কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার দফতর। সব দফতরের উদ্দেশে ‘হোম পার’-এর কড়া বার্তা, না-জানিয়ে এমন পদক্ষেপ করা হতে থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের স্বীকৃতি দেওয়া হবে না।