Jalpaiguri

হাতির পথে সংঘাত এড়াতে ‘দখলিদের’ চর ছাড়ার নির্দেশ

বৈকুন্ঠপুর জঙ্গলে সারা বছর বুনো হাতির দল থাকে। বৈকুন্ঠপুর জঙ্গল থেকে বের হয়ে এ জঙ্গল ও জঙ্গলে যায় বুনোদের দল। বিশেষ করে হেমন্তে ধান পাকার সময়ে হাতির চলাচল বেডে যায়।

Advertisement

বিল্টু সূত্রধর 

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২২ ১০:০৪
Share:

হাতির আসা-যাওয়ার পথে নদীর চর দখল করে তৈরি হয়েছে বাড়িঘর। দুর্ঘটনা এড়াতে চর থেকে সাধারণ মানুষকে সরে আসার আবেদন প্রশাসনের। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।

বছরকয়েক আগেও এলাকায় হাতির আনাগোনা ছিল। সেখানে এখন শুরু হয়েছে চাষবাস। তৈরি হয়েছে দরমা বেড়ার ঘর। বন দফতরের আশঙ্কা, ফের যদি বুনোর দল ফিরে আসে চেনা পথে! কারণ, আশেপাশেই একাধিক দলে ভাগ হয়ে ঘুরছে হাতির দল। তাই হাতির দলকে যাতায়াতের সুযোগ দিতে মানুষকেই উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন দফতর। তিস্তার চরের অসমান বালু জমিতে ট্রাক্টরে চেপে মাইক বেঁধে বনকর্মীরা ঘোষণা করছেন— ‘সকলকে জানানো যাচ্ছে, চরে হাতি চলাচলের পথে যাঁরা বসবাস করছেন এবং চাষাবাদ করছেন তাঁদের অতিঅবশ্যই বিকেল পাঁচটার মধ্যে চর ছেড়ে চলে যেতে হবে। অন্যথায় আপনাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে হবে। রাতের বেলায় হাতির করিডরে কোনও ট্রাক্টর চললে গ্রেফতার করা হবে।’ বৈকুন্ঠপুর জঙ্গল লাগোয়া জলপাইগুড়ির রংধামালির তিস্তার চরে এমনই ঘোষণা চলল রবিবার সকাল থেকে।

Advertisement

বৈকুন্ঠপুর জঙ্গলে সারা বছর বুনো হাতির দল থাকে। বৈকুন্ঠপুর জঙ্গল থেকে বের হয়ে এ জঙ্গল ও জঙ্গলে যায় বুনোদের দল। বিশেষ করে হেমন্তে ধান পাকার সময়ে হাতির চলাচল বেডে যায়। ইতিমধ্যেই তিস্তার চরে কাশবনে হাতির একটি বড় দল ঢুকে বসে রয়েছে। অন্তত ৫০-৬০টি হাতির দল আশেপাশে রয়েছে বলে বন দফতর সূত্রে খবর। এই বিষয়ে ডিএফও হরি কৃষ্ণনকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। মোবাইল বার্তায় পাঠানো প্রশ্নের কোনও উত্তর রবিবার রাত পর্যন্ত দেননি। বৈকুন্ঠপুর বনবিভাগের বেলাকোবার রেঞ্জার সঞ্জয় দত্ত বলেন, “চরে বেআইনিভাবে অনেক ঘরবাড়ি হয়েছে। হাতি চলাচলের পথে বাধা পাচ্ছে। হাতির দলকে সরাতে গেলে ঘরবাড়ি ক্ষতির বড় আশঙ্কা। এই কারণে চরের বাসিন্দাদের সরে আসতে বলা হচ্ছে। এলাকায় চলছে সচেতনতামূলক মাইকিং।’’

গত কয়েকবছর জলপাইগুড়িতে তিস্তা নদীর নিত্যনতুন চর পড়েছে। সেখানে শুরু হয়েছে চাষবাস এবং বসবাসও। চর দখল প্রতি বছরই বাড়ছে বৈকুন্ঠপুর জঙ্গল লাগোয়া রংধামালি এলাকায়। তাতেই উদ্বেগ বেড়েছে বন দফতরের। হাতি আনাগানোর পথে মানুষের কার্যকলাপ বন্যপ্রাণীদের সঙ্গে সংঘাতের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে।

Advertisement

সে সবই এ বার তুলে দিতে চাইছে বন দফতর। যাতে হাতির পথে বাধা না আসে। গত শুক্রবারই হাতির আক্রমণে তিস্তা নদী সংলগ্ন দেউনিয়া পাড়ায় একজনের মৃত্যু হয়। ওই গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জয় রায় বলেন, ‘‘বৈকুন্ঠপুর জঙ্গল থেকে প্রায় দিনই হাতির দল বের হয়ে আসছে। হাতির ভয়ে রাত জাগতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের।’’ রংধামালির চরের বাসিন্দা সুবল কীর্তনিয়া বলেন, “চরে চাষাবাদ করে রুটিরুজি চলে আমাদের। প্রচুর ধান নষ্ট হয়েছে হাতির জন্য। প্রশাসন থেকে উঠে যেতে বলছে। কোথায় যাব, জানি না!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement