নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে উত্তপ্ত অসম।—ছবি এএফপি।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএবি) এবং এনআরসি নিয়ে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির অশান্তির আঁচ পশ্চিমবঙ্গেও এসে লাগতে পারে বলে মনে করছে রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগ। তাই রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের আইজি এবং উত্তরের সব জেলার পুলিশ সুপারদের সতর্কবার্তা পাঠালেন এডিজি (আইবি) নীরজকুমার সিংহ। বুধবার সন্ধ্যায় ওই বার্তায় বলা হয়েছে, অসম থেকে সীমানা সংলগ্ন এ রাজ্যের এলাকায় মানুষ ঢুকে পড়তে পারেন। তা ছাড়াও উত্তরবঙ্গের দু’টি সংগঠন এনআরসি-র বিরোধিতায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সে ক্ষেত্রেও কোনও উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে কি না, তার উপর কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে। তবে উত্তরবঙ্গের আইজি আনন্দ কুমার বলেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রেখে চলেছি। উত্তরবঙ্গে এখনও কোনও অশান্তির বাতাবরণ নেই।’’
অসমে সিএবি নিয়ে হিংসা, আন্দোলন ছড়াতে শুরু করেছে। তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে সীমানা সংলগ্ন কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারে। কোচবিহারে গোয়েন্দা পুলিশের খবর, অসম থেকেই কিছু পরিবার কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে ঢুকে পড়েছে। অনেক পরিবারের কেউ না কেউ অসমে থাকেন। তাঁরা কেউ কেউ ফোনে জানিয়েছেন, ফিরতে চান। কিন্তু অসমে এখন যা অবস্থা, তাতে সব গুটিয়ে ফেরার অবস্থাও নেই। রাজ্যের অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ অবশ্য বলেছেন, “তেমন পরিস্থিতি হলে অবশ্যই কেউ জেলায় ঢুকলে আশ্রয় দেওয়া হবে।”
অসমে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। একাধিক ট্রেন বাতিল হয়েছে। তার প্রভাব পড়েছে সীমানা সংলগ্ন এলাকার ব্যবসায়ও। সামনেই বড়দিন এবং নববর্ষ। তখনই দুই রাজ্যের মধ্যে পণ্য পরিবহণে বিঘ্ন ঘটায় প্রচুর টাকার লোকসানের মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। অসম-বাংলা আন্তঃরাজ্য বেসরকারি বাস মালিক সমিতির দাবি, গোলমালের জেরে গত সোমবার থেকে দৈনিক গড়ে দু’লক্ষ টাকার ব্যবসা মার খাচ্ছে।