RG Kar Protest

পথই পথ, আবেদন নির্যাতিতার বাবা-মার

বাবার অভিযোগ, সরকার প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আন্দোলনকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে বোঝাপড়া করে নিম্ন আদালতে দ্রুত ট্রায়াল শুরু করে দিয়ে, শেষও করে ফেলেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৫ ০৭:৪৬
Share:

প্রতিবাদের ছবিতে চোখ। মঙ্গলবার আর জি কর হাসপাতাল চত্বরে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

তাঁদের মেয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের বিচারের জন্য সকলকে রাস্তায় নেমে আন্দোলন জারি রাখার সংকল্প নিতে হবে নতুন বছরেও। মঙ্গলবার বর্ষ বরণের রাতে ধর্মতলার অবস্থান মঞ্চ থেকে এই আবেদনই রাখলেন আর জি করের তরুণী চিকিৎসক-পড়ুয়ার বাবা-মা। একই সঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন সরকারের বিরুদ্ধেও। নির্যাতিতার বাবা বললেন, ‘‘সরকারের বিরোধিতা না করলে বিচার ছিনিয়ে আনা সম্ভব নয়।’’

Advertisement

বাবার অভিযোগ, সরকার প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আন্দোলনকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে বোঝাপড়া করে নিম্ন আদালতে দ্রুত ট্রায়াল শুরু করে দিয়ে, শেষও করে ফেলেছে। তিনি বলেন, ‘'এ সব করে আন্দোলনকে বাঁকা পথে চালিত করার চেষ্টা চলছে বলেই মনে হয়। তাই সাধারণ মানুষকে সজাগ থাকতে হবে। সরকারের ঘৃণ্য কাজের বিরোধিতা করতে হবে। যাতে সাদাকে সাদা ও কালোকে কালো বলতে সরকার বাধ্য হয়।’’

‘ওয়েষ্ট বেঙ্গল জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টর্স’ এবং ‘অভয়া মঞ্চ’-যৌথ ভাবে ধর্মতলায় এই অবস্থান চালাচ্ছে। আদালতের নির্দেশ মতো ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই কর্মসূচির অনুমতি রয়েছে। শেষ দিনে সেখানে এসে উপস্থিত হয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। এ দিন নির্যাতিতার মা বলেন, ‘‘মেয়েই ছিল আমার গোটা পৃথিবী। ২০২৪ আমার সেই গোটা পৃথিবীটাই কেড়ে নিয়েছে। আগামীকাল নতুন বছরের নতুন সূর্য উঠবে। আমাদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে আর এমন অন্যায় যেন কোনও বাবা-মাকে দেখতে না হয়।’’ এ দিনও মা অভিযোগ করেন, ৯ অগস্ট প্রায় তিন ঘণ্টা তাঁদের বসিয়ে রেখে ভিতরে তথ্য প্রমাণ সংগ্রহের নামে তা লোপাটের কাজ যে পুলিশ করেছে সেটা তাঁরা বুঝতে পারেননি। তাঁদের বিধায়ক (পানিহাটি) ও স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি তড়িঘড়ি দেহ সৎকার করেই দায় সেরেছেন। ঘটনার পরে আন্দোলনের যে ধরনের গতিপ্রকৃতি ছিল তাতে সরকার ভয় পেয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তা স্তিমিত হতেই সরকার অন্যায় কাজকর্ম শুরু করেছে বলেও এ দিন অভিযোগ করেন নির্যাতিতার বাবা-মা। তাঁদের কথায়, ‘‘নতুন বছর বলে আর কিছু নেই। আমার মেয়ের সমস্ত স্বপ্ন চলে গিয়েছে। এখন একটাই দাবি ন্যায়বিচার। আদালত ও রাস্তায় নেমে আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই তা আমরা ছিনিয়ে আনব।’’ তাঁদের আরও দাবি, সরকারি হাসপাতালের যে জায়গার মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে প্রকৃত সত্য বের করতে সিবিআইয়ের এত সময় লাগার কথা নয়। বাবা-মায়ের কথায়, ‘‘ছোট্ট একটা জায়গার মধ্যে ওই ঘটনা ঘটেছে। বক্ষ, অস্থি রোগ সহ ভিতরের লোকেরাই জড়িত বলে প্রথম থেকে বলছি। কেউ কিছু করছে না।’’

Advertisement

এ দিন রাত ৯টায় অবস্থান মঞ্চের সামনে থেকে মোমবাতি ও মশাল মিছিল করা হয়। কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘একত্রিশে সারা রাত, হোক দ্রোহের অগ্ন্যুৎপাত’। আজ, বুধবার নতুন বছরের প্রথম দিনে ‘শপথ দিবস’ পালন করবে ‘মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টার’, ‘সার্ভিস ডক্টর্স ফোরাম’ ও ‘নার্সেস ইউনিটি’। সেখানে জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টকেও থাকার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। আয়োজকেরা জানাচ্ছেন, আর জি করের প্ল্যাটিনাম জুবিলি ভবনের সামনে ‘ক্রাই অব দ্য আওয়ার্স’ মূর্তির সামনে সকলে মিলে সমস্বরে শপথ নেবেন, ‘নতুন বছর নতুন আলো, প্রত্যয়ের মশাল জ্বালো। শপথ থাকুক তিলোত্তমার, ছিনিয়ে আনব ন্যায় বিচার’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement