এ ভাবেই চলছে নদী পারাপার। নিজস্ব চিত্র।
আচমকা জল বেড়ে গিয়ে ভেসে গিয়েছে বাঁশের সাঁকো। ভোট মিটলেও দেখা নেই কারও। কোনও সুরাহার আশ্বাস পর্যন্ত মেলেনি। ফলে বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই নদী পারাপার চলছে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের খলসি ঘাটে।
উত্তর দিনাজপুরের জেলা শাসকের দফতর থেকে মাত্র কিলোমিটার পাঁচেক দূরে রায়গঞ্জ ব্লকের শেরপুর, খোকসা, বন্যাগাড়া, বরমপুর, সুবর্ণপুর গ্রামের মানুষদের রায়গঞ্জ সদরে পৌঁছতে কুলিক নদীর উপরে তৈরি বাঁশের সাঁকো ছিল ভরসা। ক্রমে নাব্যতা হারানো কুলিক নদী গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে হঠাৎই ফুলে ফেঁপে উঠতে শুরু করেছে। নদীর স্রোতের ধাক্কায় ভেঙে গিয়েছে সাঁকো।
কোভিড পরিস্থিতিতে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক দেখাতে, এমনকি ওষুধ কিনতে যেতে হলেও কুলিক নদী পার হতে হয় সবাইকে। এখন নদীতে কোথাও কোমর জল, তো কোথাও আবার গলা পর্যন্ত। সেই অবস্থাতেই সাইকেল দু’হাতে তুলে নিয়ে, এমনকি ছোট শিশুদের কাঁধে চাপিয়ে অন্য পারে যেতে হচ্ছে।
খলসি ঘাটে পাকা সেতুর দাবিতে দীর্ঘদিনের আন্দোলন ছিল রায়গঞ্জ ব্লক ও হেমতাবাদ বিধানসভার অধীনে শেরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের। বিধানসভা ভোটের আগে ‘নো ব্রিজ নো ভোট’ স্লোগান লিখে আন্দোলন করেছিলেন তাঁরা। ভোট মিটলে ব্রিজের ব্যবস্থা হবে এমন আশ্বাস পেলেও ভোট পরবর্তীতে বিজয়ী বিধায়ক বা প্রশাসনের কর্তারা কেউ ফিরেও তাকাননি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ফলে এভাবেই যাতায়াত করতে তাঁরা বাধ্য হচ্ছেন বলে অভিযোগ।
সামনেই বর্ষা ঢুকছে রাজ্যে। ভরা বর্ষায় নদীতে জল বাড়লে রায়গঞ্জ সদর থেকে পুরো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসীরা। যদিও এই বিষয়ে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ পুর্ণেন্দু দে বলেছেন, ‘‘প্রশাসনিক জটিলতায় কুলিক নদীর উপরে পাকা সেতু তৈরি করা হয়ে ওঠেনি। কোভিড পরিস্থিতি মিটলে টেন্ডার ডেকে সেতু তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে।’’