gosaba

ত্রাণের লাইনে উঠল কংক্রিটের নদীবাঁধের দাবি

দুর্গতরা আশ্রয় নিয়েছেন ফ্লাড সেন্টার বা নদীবাঁধের উপর। কবে বাড়ি ফিরবেন, কোনও নিশ্চয়তা নেই।

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা

গোসাবা শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২১ ০৫:৫১
Share:

ত্রাণের লাইনেই উঠেছে নদীবাঁধের দাবি, গোসাবার রাঙাবেলিয়ায়। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।

শুধু ত্রাণ দিলেই হবে না। চাই কংক্রিটের স্থায়ী বাঁধ। ত্রাণের লাইনে দাঁড়িয়ে এই দাবি তুলছেন ঘূর্ণিঝড়ে সব হারানো সুন্দরবনবাসী। দাবি আদায়ের আগামী ৫ জুন অবস্থান-বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে ‘সুন্দরবন নদীবাঁধ ও জীবন জীবিকা রক্ষা কমিটি’।

Advertisement

আয়লার পরে ২০১০ সালে বেশ কিছু জায়গায় কংক্রিটের নদীবাঁধ তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু, গোসাবায় ৩৮৪ কিমি বাঁধের মাত্র ১৮ কিলোমিটার অংশে নির্মাণ হয়েছে বলে অভিযোগ সেখানকার বাসিন্দাদের। একই চিত্র উপকূলবর্তী অন্য ব্লকগুলিতেও।

আমপানের ঘা এখনও দগদগে। তার উপরে ইয়াসের ছোবলে কার্যত নিঃস্ব উপকূলের বাসিন্দারা। ইয়াসের এক সপ্তাহ পরেও জলবন্দি বহু এলাকা। দুর্গতরা আশ্রয় নিয়েছেন ফ্লাড সেন্টার বা নদীবাঁধের উপর। কবে বাড়ি ফিরবেন, কোনও নিশ্চয়তা নেই।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকালে গোসাবার রাঙাবেলিয়া জেটিঘাটে পোস্টার-প্ল্যাকার্ড হাতে ত্রাণের লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন দুর্গতরা। কংক্রিটের নদীবাঁধের দাবির কথা লেখা ছিল প্ল্যাকার্ডে। স্বপন চট্টোপাধ্যায়, মলিনা মণ্ডল ও শর্মিলা মণ্ডলের মতো বাসিন্দাদের আক্ষেপ, ‘‘আয়লার পরে বুলবুল, তার পরে ফণী-আমপান। এ বার ইয়াস। প্রকৃতির কোপে ফি-বছর ঘরছাড়া হতে হচ্ছে। সকলের কাছে দাবি—শুধু ত্রাণ নয়, কংক্রিটের নদীবাঁধ চাই। যত দ্রুত সম্ভব এটা করা হোক। নজর দিক প্রশাসন।’’

সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘আবার ওই মানুষজন যাতে বিপদে না পড়েন, সেটা সুনিশ্চিত করার চেষ্টা করব। নদীবাঁধ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে উদ্যোগী হব।’’

‘সুন্দরবন নদীবাঁধ ও জীবন জীবিকা রক্ষা কমিটি’র সদস্য চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘কংক্রিটের নদীবাঁধের দাবিতে ৫ জুন নদীবাঁধেই অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছি।’’ এ প্রসঙ্গে বিডিও (গোসাবা) সৌরভ মিত্র বলেন, ‘‘কংক্রিটের বাঁধ সুন্দরবনবাসীর বহুদিনের প্রত্যাশা। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। নিশ্চয়ই স্থায়ী সমাধান হবে।’’ জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, ‘‘ভাঙন-প্রবণ এলাকায় কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণ সংক্রান্ত তালিকা সেচ দফতরের থেকে চাওয়া হয়েছে।’’ প্রাক্তন সেচমন্ত্রী সুভাষ নস্করের অভিযোগ, ‘‘কংক্রিটের নদীবাঁধ নির্মাণে সরকারের সদিচ্ছার অভাবেই এই বিপর্যয় হয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘সেচমন্ত্রী থাকাকালীন সুন্দরবনে কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণের জন্য কেন্দ্রের থেকে ৫,০৩২ কোটি টাকা এনেছিলাম। বর্তমান সরকারের সদিচ্ছার অভাবে সেই কাজ হয়নি। ফেরত চলে গিয়েছে ৪০০০ কোটি টাকা।’’ সুভাষবাবুর অভিযোগ প্রসঙ্গে বর্তমান সেচমন্ত্রী বলেন, ‘‘আগে কী হয়েছিল আমার জানা নেই। তাই এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement