প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। ফাইল চিত্র।
ঝালদা পুরসভায় যাঁরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করেছেন, গণতান্ত্রিক নীতি মেনে তাঁদেরকেই বোর্ড গড়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ চাইলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। বাংলার রাজ্যপাল হিসেবে সি ভি আনন্দ বোস শপথ নেওয়ার দিনই অধীরবাবু তাঁকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন, শাসক দলের হাতেই ক্ষমতা ধরে রাখতে রাজ্য সরকার ঝালদা পুরসভায় প্রশাসক বসাতে চলেছে। শেষ পর্যন্ত প্রশাসক নিয়োগের পরে রবিবার ফের রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে প্রদেশ সভাপতির আর্জি, শাসক দল নিজেদের ক্ষমতার অপব্যবহার করছে, ঝালদায় যে ভাবে ‘নোংরা রাজনীতি’ হচ্ছে, তাতে রাজভবনের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। রাজভবনের সামনে আজ, সোমবার ঝালদা-কাণ্ডে বিক্ষোভেরও ডাক দিয়েছে কংগ্রেস। রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অবশ্য ফের বলেছেন, নিয়ম মেনেই ঝালদায় প্রশাসক নিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু নেই বলে তাঁর দাবি।
অনাস্থা প্রস্তাবের উপরে তলবি-সভায় দুই নির্দল কাউন্সিলরকে সঙ্গে নিয়ে কংগ্রেস সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের পরেও তাদের ঝালদায় পুরবোর্ড গঠনের প্রশাসনিক সম্মতি না দেওয়ার অভিযোগে সরব কংগ্রেস। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের এক কাউন্সিলরকেই পুরবোর্ডের প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দেওয়া কাউন্সিলরেরা আবার বৈঠক করে এক জনকে পুর-দলের নেতা তথা চেয়ারম্যান বেছে নিয়েছেন। কিন্তু তাঁকে এখনও পুরবোর্ডের দায়িত্ব নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এই প্রেক্ষিতে অধীরবাবু এ দিন রাজ্যপালকে চিঠিতে লিখেছেন, ‘কংগ্রেস নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করা সত্ত্বেও তাদের বোর্ড গঠন করার অনুমতি না দিয়ে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। যাবতীয় গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি এবং পুর আইনের ধারা অমান্য করে ওই নিয়োগ করা হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানই যখন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করতে উঠে পড়ে লাগে, তখন আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে হস্তক্ষেপ চাওয়াই বাঞ্ছনীয়’। পুরমন্ত্রী ফিরহাদের অবশ্য ব্যাখ্যা, ‘‘এটা তো একটা প্রশাসনিক প্রক্রিয়া। এক জনকে চেয়ারম্যান বা প্রশাসক নিয়োগ করতে হয়। কারণ, তাঁকে পরবর্তী বোর্ডের জন্য বৈঠক ডাকতে হয়।’’ দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেসের সভাপতি প্রদীপ প্রসাদ জানিয়েছেন, ঝালদা নিয়ে রাজ্যপালের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই আজ রাজভবনের সামনে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছে। রাজ্যপাল বোস এর আগে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির চিঠি পেয়ে তাঁকে সাক্ষাতের সময় দিলেও অধীরবাবু অবশ্য গিয়ে উঠতে পারেননি।