সোমবার বিধানসভায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিতে এসে দুই বিপরীত শিবিরের সঙ্গে দেখা গেল অর্জুন এবং পবনকে। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
খাতায়-কলমে একজন বিজেপি সাংসদ। একজন বিজেপি বিধায়ক। ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ পিতা অর্জুন সিংহ মাস দুয়েক আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তুলে দেওয়া তৃণমূলের পতাকা হাতে নিয়েছেন। তবে ভাটপাড়ার বিধায়ক, পুত্র পবন সিংহ তেমন কিছু করেননি। সোমবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিতে বিধানসভায় এসেছিলেন দু’জনেই। এবং দুই বিপরীত শিবিরের সঙ্গে দেখা গেল পিতা এবং পুত্রকে।
নিউটাউনের হোটেল থেকে বাসে চেপে বিজেপির ৬৯ জন বিধায়ক একজোট হয়ে বিধানসভায় আসেন ভোট দিতে। বিজেপির টিকিটে জেতা বাকি ছয় বিধায়ক এই দলে ছিলেন না। মুকুল রায়, কৃষ্ণ কল্যাণী, বিশ্বজিৎ দাস, তন্ময় ঘোষ, সৌমেন রায় এবং অর্জুন-পুত্র পবন।
পবন আলাদা ভাবে বিধানসভায় আসেন ভাটপাড়ার বাড়ি থেকে। বিধানসভায় এসে অবশ্য সরাসরি চলে যান বিজেপি পরিষদীয় দলের ঘরে। বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে ভোট নিয়ে কথাবার্তা বলেন। কথা হয় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গেও। এর পর ভোট দিতে পর পর লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েন পবন-সহ ৬৫ জন বিজেপি বিধায়ক। পবন ছিলেন সবার সামনে। পবনের সামনে ছিলেন হুমায়ুন কবীর-সহ তৃণমূলের দুই বিধায়ক। ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুনই এ বছরের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এ রাজ্যের প্রথম ভোটদাতা। তৃতীয় ভোটার পবন।
ভোট দেওয়ার পরেও বিজেপি পরিষদীয় দলের ঘরে ফিরে যান পবন। সেখানে কিছু ক্ষণ কাটিয়ে বিধানসভা ছেড়ে বেরিয়ে যান।
পবন চলে যাওয়ার পর বিধানসভায় আসেন অর্জুন। এসেই সোজা পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে চলে যান তিনি। কথা বলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ ব্রায়েন এবং বিধানসভায় তৃণমূলের মুখ্যসচেতক তাপস রায়ের সঙ্গেও। কিছু ক্ষণের মধ্যেই পবনকে নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন ব্যারাকপুরের সাংসদ। পুত্রের বিজেপি শিবিরের সঙ্গে ভোট দেওয়ার কথা উঠতেই তাঁর জবাব, “পবন বড় হয়েছে, দু’বার বিধায়ক হয়েছে। নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আমার সঙ্গে এ বিষয়ে ওর কোনও কথা হয়নি।”
অর্জুন তৃণমূলের পতাকা হাতে নেওয়ার পর থেকে পবনকে নিয়ে কানাঘুষো চলছেই। তবে বিজেপির ভগবানপুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতির দাবি, “পবন তো আমাদের সঙ্গেই রয়েছে। ও তো তৃণমূলে যোগ দেয়নি! তাই স্বাভাবিক ভাবেই ও আমাদের সঙ্গে ভোট দিয়েছে এবং বিজেপির ঠিক করে দেওয়া প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছে।” তৃণমূলের তরফে অবশ্য এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি কেউ।