কলকাতা বিমানবন্দরের অস্থায়ী নিভৃতবাস।—ছবি পিটিআই।
কলকাতায় দ্বিতীয় উদ্ধারকারী উড়ানে ঢাকা থেকে ফিরলেন আরও ১৬৯ জন যাত্রী। বুধবার দুপুর ১২টায় তাঁদের নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ান কলকাতায় নামে। তার আগে এ দিন সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ৪ জন যাত্রী নিয়ে বিমানটি উড়ে গিয়েছিল ঢাকা। নতুন নিয়মে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের কমপক্ষে সাত দিনের জন্য নিভৃতবাসে থাকতেই হবে। যাত্রীরা চাইলে টাকা খরচ করে হোটেলে নিভৃতবাসে থাকতে পারবেন। না-চাইলে সরকারি নিভৃতবাসে থাকতে হবে।
এ দিন দুপুরে কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রে প্রথম জানা যায়, ১৬৯ জন যাত্রীই হোটেলের নিভৃতবাসে থাকবেন বলে জানিয়েছেন। সেই মতো কলকাতার বিভিন্ন হোটেলকে জানানোও হয়। বিভিন্ন হোটেলের প্রতিনিধিরাই পৌঁছে যান বিমামনবন্দরে। পাঁচতারা হোটেলে দৈনিক পাঁচ হাজার টাকায় খাওয়া-থাকার সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এ দিন দুপুরে বিমানবন্দরের বাইরে রাজ্যের প্রতিনিধিদের সঙ্গে গোলযোগ বাধে যাত্রীদের একাংশের। দূরত্ববিধি শিকেয় তুলে শুরু হয় বাদানুবাদ। অভিযোগ, অনেকেই কলকাতায় নামার আগে জানতেন না যে, তাঁদের পকেটের টাকা দিয়ে হোটেলে থাকতে হবে।
বড়বাজারের বাসিন্দা শুভশ্রী ধর মাকে নিয়ে ঢাকা গিয়েছিলেন মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হতে। সেখানেই আটকে যান। এখানে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাঁরা ফিরতে পারেননি। এ দিন বিমানবন্দরের বাইরে শুভশ্রী বলেন, “আমাকে ঢাকা বিমানবন্দরের ফর্ম পূরণ করতে বলা হয়েছে। সেখানে হোটেলের কথা লেখা ছিল না! আমরা তো টাকা দিয়ে থাকব না। দিন সাতেক সরকারি নিভৃতবাসে থেকে বাবাকে দেখতে নদিয়া যাব।”
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ভেল-এর বেশ কিছু কর্মী তুলনায় সস্তার হোটেলে থাকতে রাজি নন বলেও বিমানবন্দরের বাইরে অভিযোগ করেন। তাঁদের দাবি, এই পরিস্থিতিতে সংস্থারই হোটেলের খরচ দেওয়ার কথা। ওই সংস্থায় কাঠের কাজ করা উত্তম বিশ্বাস জানান, একসঙ্গে ১১২ জন কর্মী এই উড়ানে ফিরেছেন। ২০১৯-এর অক্টোবরে কাজে গিয়ে গত এপ্রিলে অধিকাংশেরই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।
উড়ান না-থাকায়
কাচে ঢাকা গাড়িতে একা ফিরছেন প্রিয়াঙ্কা। বুধবার দুপুর ১টায় দিল্লি থেকে রওনা হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টেয় কসবায় পৌঁছনোর কথা তাঁর। তাঁর ফেলে আসা জিনিস গুছিয়ে পাঠাতে দিল্লি থেকে গিয়েছেন দুই ভাই। সে সব শেষ করে সকালের উড়ানে ফেরার কথা তাঁদের। বুধবার সকালে গুরুগ্রামের হাসপাতালে ময়না-তদন্তের পরে বোনকে সঙ্গে করে আনতে চেয়েছিলেন প্রান্তিক ও শ্রেয়স রায়। কিন্তু, দিল্লি বিমানবন্দর, উড়ান সংস্থা, ও কলকাতা বিমানবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ করে লাভ হয়নি।
বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে কলকাতা থেকে দেশীয় উড়ান পরিষেবা। যদিও কলকাতা থেকে কোনও উড়ান সংস্থার ক’টি উড়ান চলবে তার কোনও হিসেব বুধবার বিকেল পর্যন্ত কারও কাছে ছিল না। কলকাতা বিমানবন্দরের এক অফিসারের কথায়, সম্ভবত সেই কারণেই মরদেহ নিয়ে আসার নিশ্চয়তা দিতে পারেনি কেউ।