পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
মন্ত্রিত্ব খুইয়েছেন। শাসকদলের উচ্চ পদ থেকেও সাসপেন্ডেড। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবীরা শুক্রবার আদালতে জানালেন, তিনি তাঁর বিধায়ক পদটি থেকেও ইস্তফা দিতে প্রস্তুত। অর্থাৎ দরকারে বেহালা পশ্চিম থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী তৃণমূল নেতা এখন ক্ষমতার সঙ্গে তাঁর ‘শেষ যোগাযোগ’টুকুও মুছে দিতে প্রস্তুত। অন্তত তাঁর আইনজীবীদের বক্তব্যে তেমনই ইঙ্গিত। পরে পার্থের আইনজীবী কৃষ্ণ চন্দ্র দাস আদালত চত্বরে বলেন, ‘‘বিধায়ক পদ ছাড়ার ব্যাপারে উনি নিজে কিছু বলেননি। কিন্তু যখন বারবার প্রভাবশালীর কথা বলা হচ্ছিল, আইনজীবী হিসেবে আমি বলেছি, সেক্ষেত্রে উনি বিধায়ক পদ ছেড়ে দেবেন।’’
এসএসসি দুর্নীতিতে অভিযুক্ত পার্থের ১৪ দিনের জেল হেফাজত চেয়ে শুক্রবার আদালতে আবেদন করে ইডি। কারণ শুক্রবারই পার্থের দ্বিতীয় দফার ইডি হেফাজত শেষ হয়েছে। ইডির ওই আবেদনেরই পাল্টা পাল্টা পার্থের আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, ‘‘পার্থের বাড়ি থেকে একটি চিরকুটও পাওয়া যায়নি। তা ছাড়া পার্থ এখন আর মন্ত্রী নন। দলের পদে নেই। উনি একেবারেই একজন সাধারণ মানুষ, যাঁর বয়স হয়েছে। তাই তাঁকে জামিন দেওয়া হোক।’’ এর পরেই আইনজীবীদের সংযোজন, ‘‘পার্থ তাঁর বিধায়ক পদটি থেকেও ইস্তফা দিতে প্রস্তুত।’’
কিন্তু কেন পার্থ তাঁর বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিতে চান? আসলে ‘প্রভাবশালী’ তকমা মুছে ফেলতেই এই প্রস্তাব পার্থের আইনজীবীদের। তাঁরা কৌশলে প্রমাণ করতে চান, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পার্থ আর ‘প্রভাবশালী’ নন। তাই জামিন পেলেও ‘প্রভাব খাটিয়ে’ তদন্তে কোনও ভাবে বাধা সৃষ্টি করতে পারবেন না। মন্ত্রিত্ব এবং দলের পদ না থাকলেও এখনও বিধায়ক পদ রয়েছে পার্থের। সেই পদও ছাড়ার প্রস্তাব দিয়ে তাঁর আইনজীবীরা বোঝাতে চেয়েছেন, ঘটনাপ্রবাহ যে দিকে এগিয়েছে, তাতে বর্তমানে পার্থ এক জন ‘সাধারণ’ মানুষ। আইনজীবীদের বক্তব্যের অন্তর্নিহিত অর্থ, বর্তমানে পার্থ চাইলেও তদন্তে ‘প্রভাব’ খাটাতে পারবেন না।