R G Kar Hospital Incident

ডিউটির ফাঁসে ঘুমের উপায় নেই, বলেন নির্যাতিতা

যদিও সেই সুযোগ আর তিনি পাননি। মাস খানেকের মধ্যে তিনি নিজেই চলে আসেন দেশব্যাপী খবরের শিরোনামে।

Advertisement

সোমা মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫ ০৭:০৭
Share:
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

গত বছর জুলাইয়ে উত্তর ২৪ পরগনায় এক মনস্তাত্ত্বিক কাউন্সেলরের চেম্বারে গিয়েছিলেন এক চিকিৎসক-পড়ুয়া। জানিয়েছিলেন, তিনি একেবারেই ঘুমোতে পারছেন না। শরীর অবসাদে ভেঙে আসছে। অথচ ওই অবস্থাতেই তাঁকে দিনের পর দিন কাজ করে যেতে হচ্ছে। ওই কাউন্সেলর তাঁর কাছে জানতে চান, সমস্যাটা ঠিক কোথায়? তাঁর কি ঘুম আসছে না, না কি তিনি ঘুমোনোর সুযোগ পাচ্ছেন না? চিকিৎসক-পড়ুয়া জানান, তাঁর দু’চোখ ঘুমে জড়িয়ে এলেও ঘুমোনোর উপায় নেই। এমন ভাবে তাঁর ডিউটির ব্যবস্থা করা হয়েছে, তাতে পর্যাপ্ত ঘুম তাঁর পক্ষে সম্ভবই নয়। কাউন্সেলর জানতে চান, এটা কি তাঁর কর্মক্ষেত্রে সকলের সঙ্গেই হচ্ছে, না কি শুধু তাঁর সঙ্গেই? চিকিৎসক-পড়ুয়া জানান, তাঁর অনুমান, কর্তৃপক্ষের কিছু অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবেই তাঁর উপরে এমন ডিউটির খাঁড়া। আরও কী কী ভাবে তাঁর উপরে শাস্তি নেমে আসবে তা তিনি আঁচ করতে পারছেন না। ওই কাউন্সেলর পরামর্শ হিসেবে তাঁকে স্নায়ুর উত্তেজনা প্রশমনের কিছু পন্থার কথা বলেন। চিকিৎসক-পড়ুয়া মেয়েটি জানিয়ে যান, তিনি হয়তো আবার আসবেন।

Advertisement

যদিও সেই সুযোগ আর তিনি পাননি। মাস খানেকের মধ্যে তিনি নিজেই চলে আসেন দেশব্যাপী খবরের শিরোনামে। ওই চিকিৎসক-পড়ুয়াই আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সেই নির্যাতিতা। আর ওই কাউন্সেলর মনঃসমাজকর্মী মোহিত রণদীপ।

আর জি কর মামলা যখন চর্চার বাইরে চলে যেতে যেতে ফের সামান্য ঘুরে দাঁড়িয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট যখন জানিয়ে দিয়েছে নির্যাতিতার বাবা-মায়ের আবেদন শুনতে পারবে হাই কোর্ট, আগামী সোমবার থেকে যখন সেই শুনানি তিনিও জানতেন। রাতের পর রাত ঘুমোতে না দিয়ে যে তাঁর উপরে প্রবল মানসিক চাপ তৈরি করা হচ্ছে সে কথা সতীর্থকেও জানিয়েছিলেন তিনি। এও বলেছিলেন, সত্যি কথা বলার জন্য তাঁকে হয়তো আরও মূল্য দিতে হবে।

Advertisement

শনিবার মোহিত বলেন, "ওই মেয়েটির বাবা আমাকে জিজ্ঞাসা করেছেন, প্রয়োজনে আমি আদালতে দাঁড়িয়ে এ কথা বলতে প্রস্তুত কি না। আমি বলেছি, আমি প্রস্তুত। একটি মেয়েকে স্বস্তির ঘুম পর্যন্ত দিতে পারিনি আমরা কেউ। অথচ তার পরেও চারপাশে সব কিছু আগের মতোই চলছে। যে কোনও সংবেদনশীল মানুষের কাছেই এই পরিস্থিতি আত্মধিক্কারের।"

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement