শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।
রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবিদাওয়া নিয়ে তিনি আলোচনায় বসবেন বলে সোমবার আশ্বাস দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একই সঙ্গে তিনি জানান, ক্লাসে না-গিয়ে শিক্ষকেরা আন্দোলনে যোগ দিলে বরদাস্ত করা হবে না। প্রয়োজনে এই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।
শিক্ষামন্ত্রী এ দিন জানান, ২১ জুলাইয়ের পরে আলোচনাসভা হবে নজরুল মঞ্চে। গত সপ্তাহে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, কলেজের অতিথি শিক্ষক এবং এসএসকে, এমএসকে শিক্ষকদের সঙ্গেও এ মাসের মধ্যে আলোচনায় বসবেন তিনি।
বিভিন্ন দাবিতে প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা আন্দোলনে নেমেছেন। উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা গত সপ্তাহ থেকে অনশন-অবস্থান চালাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে আমরণ অনশন করছেন ১৮ জন। এ দিনই বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে বিজেপি সমর্থিত প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে রাজ্যের পিটিটিআই প্রশিক্ষিতদের ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে অনশন-অবস্থান করার কথা ছিল। এদের সঙ্গে ছিল বিজেপি সমর্থিত রাজ্য শিক্ষক ও শিক্ষা বিষয়ক কর্মচারী সমিতি। অনশনের আগে বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট থেকে মিছিলে ছিলেন অনুপম হাজরা, জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, পুলিশ সেখানেই মিছিল আটকে দেয়। সেখানেই পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের মধ্যে ধুন্ধুমার কাণ্ড বেধে যায়! অনুপম, প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি পিন্টু পাড়ুই-সহ ৪৪ জনকে গ্রেফতার করে লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁরা জামিনে মুক্তি পান।
১৪ জন শিক্ষকের বদলি প্রত্যাহার, সংগঠনের সঙ্গে আলোচনাক্রমে যোগ্যতা অনুযায়ী বেতন সংশোধনের দাবিতে শুক্রবার থেকে সল্টলেকে উন্নয়ন ভবনের পাশে অবস্থান করছে উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। অবস্থানের দ্বিতীয় দিনে শুরু হয় আমরণ অনশন। ত্রিপলের ছাউনির নীচে সংগঠনের শিক্ষক-শিক্ষিকারা বসে আছেন রাস্তায়। অনশনরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে অপরাজিতা সেন জানান, তাঁর বাড়ি দুর্গাপুরে। রোজ ৪০ কিলোমিটার দূরে জঙ্গলের মধ্য দিয়ে স্কুটি চালিয়ে স্কুলে যেতে হয় তাঁকে। নিরাপত্তার জন্য এক জনকে সঙ্গে নিতে হয়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘উস্তির এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্যই এমন অনৈতিক ভাবে বদলি করা হয়েছে।’’ এই আন্দোলনে যুক্ত হওয়ায় তাঁকেও অনৈতিক ভাবে বদলি করা হয়েছে বলে অভিযোগ শিলিগুড়ির শিক্ষক সৌগত লাহিড়ীর। তিনি জানান, তাঁকে রোজ ৭৫ কিলোমিটার দূরে জলপাইগুড়ির একটি স্কুলে যেতে হয়। পথে হাতি ও লেপার্ডের ভয় আছে। ক্লাস না-করে পথে নামার বিষয়ে এই আন্দোলনের নেত্রী পৃথা বিশ্বাস জানান, ছুটি নিয়েই তাঁরা আন্দোলন করছেন। স্কুলে পঠনপাঠন যাতে বিঘ্নিত না-হয়, সেই বিষয়ে তাঁরা সচেতন।