Partha Chatterjee

Partha Chatterjee: কারান্তরালে বসে পার্থ স্মৃতি রোমন্থন করলেন স্বাধীনতা দিবসে পতাকা উত্তোলনের ব্যস্ততার

দেশের ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসে খানিক মেদুর শুনিয়েছে পার্থকে। ঘটনাচক্রে, রবিবারই পার্থের কেন্দ্র বেহালা পশ্চিমে একটি সভায় গিয়েছিলেন মমতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২২ ১৮:০৬
Share:

স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষে বিগত সব স্বাধীনতা দিবসের স্মৃতি রোমন্থন করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গত বছর স্বাধীনতা দিবসের দিন তিনি রাজ্যের ব্যস্ত এবং ওজনদার মন্ত্রী। বছর ঘুরেছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখন ‘প্রাক্তন’ মন্ত্রী। এহ বাহ্য, তিনি কারান্তরালে। সোমবার, দেশের স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষে বিগত সব স্বাধীনতা দিবসের স্মৃতি রোমন্থন করেছেন পার্থ। দিনভর নিজের সেল-এই ছিলেন তিনি। যাঁদের সঙ্গে দেখা হয়েছে, তাঁদের বলেছেন, এই দিনটায় তিনি কতটা ব্যস্ত থাকতেন! কত জায়গায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে যেতে হত তাঁকে। এ-ও এক সমাপতন যে, স্বাধীনতা দিবসের দিন এই প্রথম পার্থ ‘পরাধীন’। সংশোধনাগারের অন্তরালে।

Advertisement

তবে স্বাধীনতা দিবসে সংশোধনাগারের বাকি আবাসিকদের (প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে সোমবার মোট আবাসিক সংখ্যা ২,৫৬৯ জন) মতোই মধ্যাহ্নভোজের বিশেষ মেনু খেয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। সাধারণত প্রতিদিন দুপুরের খাদ্যতালিকায় ভাত-ডাল-সব্জি থাকে। তার সঙ্গে কোনওদিন থাকে মাছ, কোনওদিন সয়াবিন, কোনওদিন পাঁঠার মাংস, কোনওদিন ডিম। জেল সূত্রের খবর, স্বাধীনতা দিবসে মেনু ছিল ‘বিশেষ’।

পার্থের মেনুতে ছিল ভাত, মাছের মাথা দিয়ে মুগের ডাল, শাকভাজা, আলু-পটলের কষা কষা তরকারি, সর্ষেবাটা দিয়ে কাতলা মাছের কালিয়া। তার সঙ্গে ছিল কাজু-কিশমিশ-আমসত্ত্ব দিয়ে চাটনি। আর শেষপাতের মিষ্টিমুখে রসগোল্লা এবং এক হাতা বোঁদে। পার্থ সব ‘আইটেম’-ই খেয়েছেন। তবে সে ব্যবস্থা তাঁর একার জন্য ছিল না। সংশোধনাগারের বাকি আবাসিকেরাও সেই একই খাবার খেয়েছেন।

Advertisement

এসএসসি-দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হয়ে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হাতে গ্রেফতার হওয়ার কিছুদিন পর পার্থকে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে পাঠায় আদালত। তখন থেকে তিনি সেখানেই রয়েছেন। সংশোধনাগারের ভিতরে উচ্চ নিরাপত্তা এলাকায় (হাই সিকিউরিটি জোন) একটি আলাদা সেল-এ তাঁকে রাখা হয়েছে। জেল সূত্রের খবর, পার্থের দিন কাটছে মূলত বই পড়ে আর সেল-এর বাইরে দিনের বেলা খানিকটা ঘোরাঘুরি করে। আনন্দবাজার অনলাইন আগেই জানিয়েছিল, প্রাক্তন মন্ত্রী ‘শ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত’ পড়ছেন। তার সঙ্গেই আরও বই পড়ছেন পার্থ। তবে দিনের বেশিরভাগ সময়েই সেল-এ বসে থাকছেন তিনি। সেল-এর সামনেই একটি স্নান করার জায়গা রয়েছে। সেখানেই রোজ স্নান সারেন প্রাক্তন মন্ত্রী। সোমবারেও তেমনই করেছেন।

শারীরিক নানা সমস্যার জন্য দিনে পার্থকে মোট ১৯টি ওষুধ খেতে হয়। সময় মেনে নিয়মিত সেই ওষুধ দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। তবে পার্থের ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, আইনি লড়াই নিয়ে তিনি মানসিক উদ্বেগে রয়েছেন। কী ভাবে, কোন পথে সেই লড়াই লড়া হবে, তা নিয়ে তিনি চিন্তিত।

সোমবার, দেশের ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসে অবশ্য খানিক মেদুর শুনিয়েছে তাঁকে। ঘটনাচক্রে, রবিবারই পার্থের কেন্দ্র বেহালা পশ্চিমে একটি সভায় গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সেখানে গিয়ে পার্থের পাশে থাকার কথা বলেননি। বস্তুত, তিনি পার্থের নামও বিশেষ করেননি। বরং তিনি অনুব্রত মণ্ডলের পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘এক অনুব্রতকে গ্রেফতার করলে লক্ষ লক্ষ অনুব্রত জন্ম নেবে!’’ যা শুনে আপাতত সিবিআই হেফাজতে-থাকা অনুব্রত মানসিক জোর পেয়েছেন। অন্তত তাঁর আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতার তেমনই বক্তব্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement