শোভনের নির্বাচনী ক্ষেত্রে দলের জনসংযোগ কর্মসূচির দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন পার্থ।—ফাইল চিত্র।
তিনি সক্রিয় না হলেও সমস্যা নেই, তবে হলে ভাল। শোভন চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে বৃহস্পতিবার এই বার্তাই দিলেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বেহালা এলাকায় এ দিন ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা করলেন পার্থ। বেহালা পূর্বের বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতি নিয়ে স্বাভাবিক কারণেই প্রশ্ন উঠল। শোভনের অনুপস্থিতিকে যে বড় সমস্যা বলে তিনি মনে করেন না, সে ইঙ্গিত দিয়ে পার্থ বললেন, ‘কাউন্সিলররা তো রয়েছেন, ব্লক সভাপতিরা তো রয়েছেন’।
‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির আওতায় জনসংযোগের অনুষ্ঠানে এ দিন বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ তথা কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়। ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলররাও।
শোভন চট্টোপাধ্যায় কেন নেই, সে প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তিনি তাঁর নিজস্ব কারণে বহু দিন থেকেই এই রকম রাজনৈতিক কর্মসূচিতে উপস্থিত হতে পারছেন না। এটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার।’’ ভবিষ্যতে এই ধরনের কর্মসূচিতে শোভন উপস্থিত হবেন বলে তিনি আশা করেন— এমন মন্তব্যও পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন করেছেন।
আরও পড়ুন: সারদার টাকা ফেরত দিতে ইডি দফতরে শতাব্দী, ফের তলব রাজীব কুমারকে
বুধবারই শোভন চট্টোপাধ্যায় মুখ খুলেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। মিল্লি আল-আমিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় ওই দিন এক সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিযোগ করেন যে, তাঁকে তাঁর কলেজে হেনস্থা করার চেষ্টা শুরু হয়েছে এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশেই সে সব হচ্ছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা পদে তিনি থাকুন, এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান না, সেই কারণেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁকে সরানোর তোড়জোড় শুরু করেছেন— এই রকমই দাবি করেন বৈশাখী। সেই সাংবাদিক সম্মেলনে প্রায় সারা ক্ষণ বৈশাখীর পাশে ছিলেন শোভন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘বন্ধু হিসেবে আমি এবং বৈশাখী পরস্পরের পরিপূরক এবং বৈশাখী যে সিদ্ধান্ত নেবেন, আমি সেই সিদ্ধান্তের পাশেই থাকব।’’ তিনি তৃণমূলের হয়ে সক্রিয় হচ্ছেন না বলেই কি বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ ভাবে ‘হেনস্থা’ করা হচ্ছে? এমন প্রশ্নও তুলে দেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা বেহালা পূর্বের বিধায়ক।
আরও পড়ুন: চিট ফান্ডের মালিকের সুইমিং পুলে ৩০০ কেজি ‘সোনা’! চোখ কপালে উঠল তদন্তকারীদের
শোভনের এই সাংবাদিক সম্মেলনের পরে ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। শোভনের নির্বাচনী ক্ষেত্রে দলের জনসংযোগ কর্মসূচির দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন পার্থ। শোভনকে ছাড়াই যে তৃণমূল ভাবতে শুরু করেছে, সেই বার্তাই দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে বলে রাজনৈতিক শিবির মনে করছে। বৃহস্পতিবার শোভন চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে তৃণমূল মহাসচিব কোনও বিরূপ মন্তব্য করেননি ঠিকই। কিন্তু শোভন অপরিহার্য নন, এই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। জনসংযোগ কর্মসূচির জন্য বিধায়কের উপস্থিতি অপরিহার্য যে নয়, তা বুঝিয়ে দিয়ে পার্থ এ দিন বলেন, ‘‘কাউন্সিলররা আছেন, ব্লক সভাপতিরা আছে। আমরা তো কাউন্সিলরদের মাধ্যমেই কাজ করি।’’ দল যথেষ্ট শক্তিশালী, তবে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যেই জনসংযোগে জোর দেওয়া হয়েছে— বার্তা তৃণমূল মহাসচিবের।