পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত সিবিআইয়ের মামলায় বুধবারও ঝুলেই রইল প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের মামলা। বুধবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে পার্থের জামিন মামলার শুনানি ছিল। কিন্তু পরবর্তী শুনানি কোন এজলাসে হবে, তা স্পষ্ট না হওয়ায় আপাতত ঝুলে থাকল সিবিআইয়ের মামলায় পার্থর জামিনের আর্জি।
বর্তমানে ব্যাঙ্কশাল আদালতের বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে সিবিআইয়ের মামলাগুলি চলছে। ইডির মামলাগুলি চলছে একই আদালতে বিচারক শুভেন্দু সাহার এজলাসে। বুধবার পার্থের জামিনের আর্জির শুনানি ছিল বিচারক মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে। সেখানে শুনানির শুরুতেই ইডি আবেদন জানায়, মামলাটি বিচারক সাহার এজলাসে সরানো হোক। বস্তুত, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই এবং দুর্নীতির সঙ্গে সম্পর্কিত আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্ত চালাচ্ছে ইডি। সে ক্ষেত্রে ইডির বক্তব্য, মামলাগুলি একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ার কারণে সেগুলি একই এজলাসে শোনা হোক।
ইডির আর্জি শোনার পর, আগে এই বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে চায় আদালত। বিচারক মুখোপাধ্যায় জানান, পরবর্তী শুনানি কোন এজলাসে হবে সেটি আগে স্থির হোক। আগামী ২২ নভেম্বর এই বিষয়ে শুনানি হবে ব্যাঙ্কশাল আদালতে বিচারক মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে। ফলে পার্থের জামিনের আবেদনের শুনানি আরও পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন আইনজীবীদের একাংশ।
প্রায় আড়াই বছর আগে, নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ২০২২ সালের ২২ জুলাই দক্ষিণ কলকাতার নাকতলায় পার্থের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছিল ইডি। দীর্ঘ তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত অর্পিতার টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে হানা দিয়েছিল ইডি।
টালিগঞ্জের ‘ডায়মন্ড সিটি’ আবাসনে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে নগদ ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে ইডি। একই সঙ্গে উদ্ধার হয় প্রচুর বিদেশি মুদ্রা এবং সোনার গয়নাও। নিয়োগ দুর্নীতিতে বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে ২০২২ সালের ২৩ জুলাই পার্থ এবং অর্পিতাকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। এর পরে ওই বছরেরই ২৭ জুলাই বেলঘরিয়ার ‘ক্লাব টাউন হাইট্স’ আবাসনে অর্পিতার নামে থাকা দু’টি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে মোট ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা নগদে উদ্ধার করে ইডি। সঙ্গে প্রচুর টাকার গয়না। ইডির দাবি, অর্পিতার দু’টি ফ্ল্যাট থেকে নগদে মোট ৪৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং ৫ কোটি ৮ লাখ টাকার গয়না উদ্ধার হয়েছিল। সঙ্গে সাতটি অন্য দেশের মুদ্রাও।
গ্রেফতারির পর থেকে একাধিক বার জামিনের জন্য আবেদন জানিয়েছেন পার্থ। কিন্তু জামিন এখনও অধরা। পার্থের জামিনের বিরুদ্ধে দুই তদন্তকারী সংস্থারই অন্যতম প্রধান যুক্তি হয়ে উঠে এসেছে, তিনি প্রভাবশালী। জামিনে মুক্তি পেয়ে গেলে তিনি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারেন বলে বার বার আদালতে জানিয়েছে দুই তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীরা।