শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়
রাজ্যের অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গেই কোনও খেলার মাঠ নেই। ফলে সেখানকার ছাত্রছাত্রীরা খেলাধুলোর সুযোগ পায় না। সেই ঘাটতি কিছুটা পূরণের জন্য এ বার ওই সব স্কুলের পড়ুয়াদের খেলার জন্য নিকটবর্তী পুরসভার পার্কে, গ্রাম-মফস্সলের ক্ষেত্রে স্কুলের কাছাকাছি কোনও মাঠে নিয়ে যেতে হবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। এমনটাই জানিয়েছেন কলকাতা রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের এক আধিকারিক। তিনি জানান, পার্কে বা মাঠে নিয়ে যাওয়ার জন্য দরকার এক জন শিক্ষক বা শিক্ষিকার নজরদারিও। একই সঙ্গে প্রাথমিক স্তরে গ্রামবাংলার বিভিন্ন ধরনের খেলার অনুশীলন আবশ্যিক করার ব্যবস্থাও হচ্ছে।
শিক্ষা শিবিরের একাংশের প্রশ্ন, এমনিতেই তো অনেক প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকা কম। তা হলে আলাদা করে খেলার মাঠে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে যাওয়া এবং নজরদারির জন্য শিক্ষক বা শিক্ষিকা মিলবে কী ভাবে?
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই প্রাথমিক স্কুলে চু-কিতকিত, দাড়িয়াবান্ধা, টিপ্পা, স্কিপিংয়ের মতো গ্রামবাংলায় প্রচলিত বিভিন্ন ধরনের খেলা বাধ্যতামূলক করা হবে। মিড-ডে মিল বা স্কুলের বিরতির মধ্যে এক জন শিক্ষক বা শিক্ষিকার তত্ত্বাবধানে এই সব খেলার বন্দোবস্ত করতে হবে। তবে সামগ্রিক ভাবে এর দায়িত্বে থাকবেন প্রধান শিক্ষক বা প্রধান শিক্ষিকাই। শিক্ষা দফতরের মতে, এই ধরনের খেলাধুলোর ফলে পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের সার্বিক উন্নয়নও হবে। পঠনপাঠনের সঙ্গে সঙ্গে শারীরচর্চা চালিয়ে যাওয়ার জন্যই এই ব্যবস্থা। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় রবিবার বলেন, ‘‘এর ফলে স্কুলগুলো পড়ুয়াদের আকর্ষক হয়ে উঠবে। সেই সঙ্গে পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য গঠন ও চরিত্র গঠনের ব্যবস্থা করা যাবে।’’
যদিও চু-কিতকিত বা স্কিপিং খেলে কতটা চরিত্র গঠন হবে বা স্বাস্থ্য গঠন হবে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষক শিবিরের একাংশ। নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (এবিপিটিএ)-র সহ-সভাপতি সমর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘চু-কিতকিত বা স্কিপিং নয়। বরং এই কচিকাঁচাদের ভাল প্রশিক্ষকের সাহায্য নিয়ে যোগাসন শিক্ষা দিলে তা স্বাস্থ্য গঠন ও চরিত্র গঠনে অনেক বেশি কার্যকর হত।’’ সমরবাবুর মতে, এগুলো আসলে সরকারের দেখনদারি সিদ্ধান্ত। সরকার বরং প্রাথমিকে পাঠ্যসূচির উন্নয়নের দিকে নজর দিক।