প্রতীকী ছবি।
কোভিড-১৯-এর জন্য মিলেছিল সাময়িক ‘ছুটি’। আর ‘ছুটি’ শেষে পাঁচিল ঘেরা জীবনে ফিরতে শুরু করেছেন অনেকেই। যাঁদের ফিরতে দেরি ছিল, তাঁরা বাড়তি ‘ছুটি’র সুযোগ পেলেন। কারণ, আরও এক মাস প্যারোল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কারা দফতর।
এখনও পর্যন্ত রাজ্যে বিভিন্ন জেলে থাকা ১৮০ জন মতো বন্দি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কয়েক জনের উপসর্গ থাকলেও বেশির ভাগই উপসর্গহীন। ৯৩ জনের কাছাকাছি কর্মী-আধিকারিক সংক্রমিত হয়েছেন।
দেশের বিভিন্ন জেলে ধারণক্ষমতার থেকে বেশি বন্দি রয়েছে। তাই করোনা আবহে অন্তর্বর্তী জামিনে বিচারাধীন এবং দণ্ডিত বন্দিদের প্যারোলে মুক্তির জন্য দেশের প্রতিটি রাজ্যে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি তৈরি হয়। কমিটির সুপারিশে বঙ্গের জেল থেকেও সাময়িক ‘মুক্তি’ পান কয়েক হাজার বন্দি। তাঁরা বেশির ভাগই পাঁচ মাসের জন্য জেলের বাইরে থাকার সুযোগ পাচ্ছেন। কমিটি ছাড়া কিছু দণ্ডিতদের সাময়িক মুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কারা দফতর। সেই তালিকায় থাকা বন্দিদের প্যারোল আরও এক মাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দফতর। বলা হয়েছে, ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে অনেকে জেল-জীবনে তিন-চার মাস বাইরে থাকার সুযোগ পেলেন। তবে ২৬ অগস্টের মধ্যে যে সব বন্দি প্যারোলের মেয়াদ শেষ করে জেলে ফিরে এসেছেন, তাঁরা এই সুযোগ পাচ্ছেন না।
কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে অন্তর্বর্তী জামিন এবং প্যারোলে মুক্তি পেতে শুরু করেন বন্দিরা। তাই মেয়াদ শেষে জেল-সাকিনে ফিরেও আসতে শুরু করেছেন অনেকে। অন্যদের থেকে দশ থেকে চোদ্দ দিন পৃথক করে রাখা হচ্ছে সাময়িক ‘ছুটি’ শেষে ফিরে আসা বন্দিদের। সংখ্যা বেশি হওয়ায় বড় জেলগুলির অব্যবহৃত জায়গাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে সেখানে রাখা হচ্ছে তাঁদের। ধীরে ধীরে জেলেও অনুপ্রবেশ করেছে কোভিড-১৯। তাই ঝুঁকি এড়াতেই পৃথকীকরণের সিদ্ধান্ত কারা দফতরের। করোনা আবহে কয়েক মাস ধরেই জেলে নতুন আসা অভিযুক্তদের দশ থেকে চোদ্দ দিন আলাদা করে ‘আইসোলেশনে’ রাখছেন বিভিন্ন জেল কর্তৃপক্ষ।
রাজ্যে মারা গিয়েছেন দুই বন্দি। তাঁদের দেহেও সংক্রমণ মিলেছে। বন্দি এবং কর্মী-আধিকারিকদের বেশির ভাগই এখন সুস্থ এবং উপসর্গহীন বলে কারা দফতর সূত্রে দাবি। রাজ্যের ৬০টি জেলে বর্তমানে ২৪ হাজারের সামান্য বেশি বন্দি রয়েছেন। তার মধ্যে প্রায় ৩৪০০ বন্দির করোনা পরীক্ষা হয়েছে বলে জানাচ্ছে কারা দফতর। আধিকারিকদের দাবি, স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ এবং পরামর্শ মেনেই পরীক্ষা করানো হচ্ছে।