পার্শ্ব শিক্ষিকা রেবতী রাউল।—নিজস্ব চিত্র।
বিকাশ ভবনের উল্টো দিকে পার্শ্ব শিক্ষকদের অনশন সপ্তম দিনে পড়ল। তারই মধ্যে এক পার্শ্ব শিক্ষিকার অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে দানা বাঁধল বিতর্ক।
পশ্চিম মেদিনীপুরের মোহনপুরের দক্ষিণ বোড়াই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পার্শ্ব শিক্ষিকা রেবতী রাউল (৪৮)-এর মৃত্যু হয়েছে গত সোমবার বিকেলে। তাঁর বাড়ি বোড়াইতেই। তিনি কলকাতার অনশনে গিয়ে অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। পার্শ্ব শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষেরও দাবি, ‘‘রেবতী রাউল পাঁচ দিন বিক্ষোভ-অবস্থানে ছিলেন। উনি অনশন করেননি। তবে বিক্ষোভরত অবস্থাতেই অসুস্থ হয়ে গত ১৮ নভেম্বর বাড়ি ফিরে যান। সে দিনই হাসপাতালে মারা যান।’’ তবে পরিবার জানিয়েছে, বাইক থেকে পড়ে মাথায় চোট পেয়েছিলেন রেবতী।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র এ দিন বলেন, ‘‘অধিকার আদায়ের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে প্রাণ হারাতে হল পার্শ্ব শিক্ষিকা রেবতী রাউলকে। আমাদের দাবি, রাজ্য সরকার অবিলম্বে আন্দোলনরত পার্শ্ব শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসুক এবং মৃত শিক্ষিকার পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিক।’’ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘যে কোনও মৃত্যুই দুঃখের। উনি এখানে না জেলায় মারা গিয়েছেন, তা জানি না। তবে আগেও বলেছি, একসঙ্গে ওঁদের সব দাবি মানতে পারব না।’’
গত সোমবার মোহনপুরে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে গিয়েছিলেন রেবতী। স্থানীয়রা জানান, ছেলে কৃশানুর বাইকে ফেরার সময় পড়ে যান তিনি। প্রথমে মোহনপুর হাসপাতাল, পরে এগরা সুপার স্পেশ্যালিটিতে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। রেবতীর স্বামী দয়ানিধি রাউল মোহনপুর থানার হোমগার্ড। তিনি মানেননি তাঁর স্ত্রী আন্দোলনে গিয়েছিলেন। দয়ানিধি বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী কলকাতায় অন্য কাজে গিয়েছিলেন। বাইক থেকে পড়ে মাথায় চোট পান। হাসপাতালে মৃত্যু হয়।’’
বিক্ষোভকারীরা জানান, সন্দেশখালির তাপস বর ব্রেন স্ট্রোক হয়ে এবং মুর্শিদাবাদের আর এক অনশনকারী আব্দুল ওহাব মল্লিক অসুস্থ হয়ে এনআরএসে ভর্তি। এ দিন অনশনমঞ্চে গিয়েছিলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। পার্শ্ব শিক্ষকদের দাবি নিয়ে আলোচনায় বসার দাবিতে শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েন মান্নান। এসইউসি এবং সিপিআই (এমএল) লিবারেশনও দ্রুত আলোচনায় বসার দাবি জানিয়েছে।