প্রধানের লেখা চিঠি। নিজস্ব চিত্র
‘দুয়ারে সরকার’-এর শিবিরে আবেদন করে এলাকার অনেকে এখনও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পাননি—পঞ্চায়েতের প্যাডে ব্লক প্রশাসনের কাছে এই অভিযোগ জানিয়ে বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন তৃণমূলেরই এক পঞ্চায়েত প্রধান। পুরুলিয়ার ঝালদা ১ ব্লকের ইলু-জারগো পঞ্চায়েতের প্রধান প্রকাশ মাহাতোর আশঙ্কা, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না থাকায় ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পে আবেদন করতে পারবেন না স্থানীয় অনেক মহিলা। ঘটনা জেনে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। যদিও পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র নবেন্দু মাহালি বলেন, ‘‘জনপ্রতিনিধি হিসেবে প্রধান মানুষের দাবির কথা প্রশাসনের কাছে তুলে ধরেছেন।’’ জেলাশাসক রাহুল মজুমদারের আশ্বাস, ‘‘স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড না থাকলেও গত বারের শিবিরের আবেদনকারীদের ‘ইউনিক রেজিস্ট্রেশন নম্বর’ দেওয়া হয়েছিল। তা উল্লেখ করে তাঁরা লক্ষ্মীর ভান্ডারের জন্য আবেদন করতে পারবেন।’’
প্রকাশবাবু বিডিও-কে ৬ অগস্ট লেখা চিঠিতে জানান, গত ডিসেম্বরে তাঁর এলাকায় ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির হয়। সেখানে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য অনেকে আবেদনপত্র জমা দিলেও এখনও কার্ড করার জন্য ডাক পাননি। তাঁর ধন্দ, ‘‘যত দূর জানি, লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে আবেদন করতে হলে সংশ্লিষ্টের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকতে হবে। তা হলে এলাকার অনেকে ওই প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হবেন।’’ ওই পঞ্চায়েতের কর্মাডি গ্রামের সাবিত্রী মাহাতোর চিন্তা, ‘‘দুয়ারে সরকারের শিবিরে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন করেও পাইনি। লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের সুবিধে কি পাব না?’’
বিডিও (ঝালদা ১) রাজকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রধানের আবেদনের বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আনা হয়েছে।’’ জেলাশাসক জানান, স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। ঝালদার বাসিন্দা তথা বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর মাহাতোর কটাক্ষ, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী যে তৃণমূল সরকারের লোক ঠকানো প্রকল্প, প্রথম থেকেই বলেছি। এ বার ওদের নেতারাও বুঝতে পারছেন।’’
অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও তৃণমূল নেতা নবেন্দুবাবু বলেন, ‘‘প্যাডে চিঠি না দিয়ে প্রধান বিষয়টি ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে আগে আলোচনা করতে পারতেন। দলীয় নেতৃত্বকেও জানাতে পারতেন।’’ প্রধানের বক্তব্য, ‘‘দলীয় নেতৃত্বকে না জানালেও ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে এ নিয়ে একাধিক বার কথা হয়েছে।’’ বাঘমুণ্ডির তৃণমূল বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো বলেন, ‘‘শুধু ইলু-জারগোই নয়, আরও কিছু এলাকা থেকে এমন সমস্যার কথা শুনেছি। প্রশাসন গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।’’