সোমবার হরিশ্চন্দ্রপুরের জনসভায় ডিওয়াইএফ-এর রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচের মতো টাইব্রেকারে গড়াবে না পঞ্চায়েত নির্বাচন। বরং ইট ছুড়লে পাটকেল খাওয়ার জন্য তৈরি থাকতে হবে। পঞ্চায়েতের দখল নিয়ে ‘জান কবুল’ করতেও তৈরি বামেদের যুবকর্মীরা। ‘কাজের দাবিতে, ভাতের দাবিতে’ বুথ আগলাবেন তাঁরা। সোমবার মালদহে ডিওয়াইএফআইয়ের ডাকা একটি জনসভায় এমনই হুঙ্কার দিলেন বামনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। যদিও বামেদের হুঙ্কারকে প্রলাপ বলে আখ্যা দিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
সোমবার হরিশ্চন্দ্রপুরের ওই জনসভায় ডিওয়াইএফ-এর রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। মীনাক্ষী বলেন, ‘‘ইঁট ছুড়তে এলে পাটকেলের জন্য রেডি থাকতে হবে। নিরামিষ লড়াই হবে না। পঞ্চায়েতের জান কবুল লড়াই হবে। আর পঞ্চায়েতের লড়াইয়ের জিত গত কালের (রবিবার) ফুটবল ম্যাচের মত টাইব্রেকারে হবে না। এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাজের দাবিতে ভাতের দাবিতে যুবরা বুক দিয়ে নিজের বুথ আগলাবে।’’
মীনাক্ষীর মতোই সেলিমের কণ্ঠেও হুঁশিয়ারির সুর শোনা গিয়েছে। নিজের ভাষণে তিনি বলেন, ‘‘আমরা পুলিশকে বলেছি চোর ধরো, জেল ভরো। কিন্তু মানুষ ধৈর্য হারাচ্ছে। পুলিশ যদি না ধরে আর জেলে যদি না ভরে, তা হলে পাবলিক ধরবে। আর পাবলিক ধরলে তার তো জেল নেই। পাবলিক তো আর জেলে নিয়ে যাবে না। গাছে বেঁধে রাখবে। মেদিনীপুরে ইতিমধ্যেই যা শুরু হয়েছে।’’
রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সেলিমের দাবি, ‘‘শিক্ষক নিয়ে দুর্নীতি করার জন্য অমিত শাহের সঙ্গে এক জায়গায় বসতে হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।’’ শুভেন্দুকেও নিশানা করেন সেলিম। তাঁর দাবি, ‘‘শুভেন্দুকে বিরোধী নেতা বলা হচ্ছে। তিনি কি বিরোধী নেতা? চেটেপুটে তৃণমূলের লুট করা খাবার খেয়েছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট লুট হয়েছে। এই শুভেন্দু পঞ্চায়েতে মমতার হয়ে কাজ করেছিলেন। এখন নকল বিজেপি সেজেছেন। আসলে কেন্দ্রে মোদীর লুট, রাজ্যে দিদির লুট।’’
পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়েছেন সেলিম। তাঁর কথায়, ‘‘আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল, বিজেপির বিরুদ্ধে শিরদাঁড়া সোজা করে লড়তে চাই। তাই সবাইকে এককাট্টা হতে বলছি। যুবরা বুথে বুথে পাহারা দেবে। কোনও সিভিক, কোনও পুলিশ, কোনও মস্তান, কোনও গুন্ডা ভোট লুট করতে পারবে না।’’
বামেরা হুঙ্কার দিলেও তা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি আব্দুল রহিম বক্সী। তিনি বলেন, ‘‘পাগলের প্রলাপ করছে সিপিএম। সন্ত্রাস করে ভোট করার অভ্যাস সিপিএমের। সময় এলে মানুষই জবাব দেবে। তৃণমূলের নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার চোরদের সমর্থন করে না। যার প্রমাণ সকলের সামনে রয়েছে।’’